রাজ্য

তিস্তা বাঁধের জালে একশো কুড়ি কিলো ওজনের বাঘা আড় মাছ, পাড়ে তুলতে হিমশিম খেল জেলেরা


মাধবী ঘোষ, চিন্তন নিউজ, ৭ জুলাই: তিস্তা ব্যারেজে ধরা পরল একশো কুড়ি কিলো ওজনের রিভার মনস্টার। মাছটিকে পাড়ে তুলতে কালঘাম ছুটল জেলেদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গজলডোবার ১২ নম্বর কলোনির বাসিন্দা মৎস্যজীবী রুহি দাস সঙ্গীদের নিয়ে শুক্রবার দুপুরে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যান তিস্তা ব্যারেজের লকগেটের কাছে। ভরা তিস্তায় জাল বিছাতে থাকেন তারা। লক গেটের কাছে বেশ খানিকটা এলাকা জুড়ে জাল বিছানো হয়ে গেলে শুরু হয় জাল গোটানোর পালা। এরপর শুরু হয় বিপত্তি। জাল গুটানোর সময় দেখা যায় এটি প্রচন্ড ভারী। রুহি দাস সহ মোট চার পাঁচ জন মিলে হিমশিম খেতে থাকেন। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় জাল খানিকটা তোলার পর জালের দিকে তাকাতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় জেলেদের। দেখেন, একটি-দুটি নয় জালে পড়েছে আটটি বাঘা আড়।

রায়গঞ্জের বাসিন্দা তপন দে বলেন, “খবর পেয়ে ওখানে ছুটে যাই।” জাল টেনে ১৩ নম্বর কলোনির কাছাকাছি আসতে আরো লোকজনকে ডেকে আনেন জেলেরা। জাল খুলে প্রায় ১০ কেজি ওজনের সাতটি মাছকে পাড়ে তুলে আনা হলেও একশো কুড়ি কিলোর মাছটি প্রচন্ড হুটোপুটি করতে থাকে। কিভাবে এত বড় মাছকে তোলা হবে তা নিয়ে ভাবনায় পড়ে যান জেলেরা। তাই জলেই জালটি ডুবিয়ে রাখেন তারা। অনেকক্ষণ পর মাছটি নিস্তেজ হলে তার গায়ে প্লাস্টিকের দড়ি জড়িয়ে সবাই মিলে টেনে তোলে। পাড়ে তোলা মাত্রই পাইকারদের হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ৩০০ টাকা কিলো দরে সব মাছ কিনে নেন তারা।

তিস্তায় বাঘার মাছ ধরা পড়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এত বড় বাঘা আড় অন্তত গত কুড়ি বছরে ধরা পড়েছে বলে খবর নেই।

বাঘা আড় আসলে কি? হুগলি জেলার সিঙ্গুরের বাসিন্দা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মৎস্য বিশেষজ্ঞ সুমিত মিত্র জানাচ্ছেন স্থানীয় নাম বাঘা আড় হলেও আসলে এটি বোয়াল গোত্রের মাছ। এরা রিভার মনস্টার। মাছ খায়। তবে এত বড় মাছ কোথাও থেকে ভেসে আসেনি। এটি ওই এলাকাতে দীর্ঘদিন ধরে ছিল, নদীর জল বাড়ায় কোন ভাবে বাইরে এসেছে।

অনেক জায়গায় এই মাছকে হেলিকপ্টার ক্যাটফিশ ও বলা হয়। মালয়েশিয়া ইন্দোনেশিয়া একে তাপাহ বলে ডাকা হয়। বড় হ্রদ ও নদীতে পাওয়া যায় বাঘা আড়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।