দেশ বিদেশ

নেপালে ইয়ুথ ক্যাম্প শপথ নিল পরিবেশ রক্ষার


নিউজডেস্ক, চিন্তন নিউজ, ৪ জুলাই: নেপাল শহরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্ব উষ্ণায়ন এর বিরুদ্ধে যুবকদের ভূমিকা নিয়ে এক যুব ক্যাম্প। ক্যাম্প এর মূল উদ্দেশ্য  সার্ক দেশভুক্ত প্রতিনিধিদের নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবেশ রক্ষার শপথ। মূলত ভুটান, বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালকে নিয়ে এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনা করলেন স্টোনকে এবং পরিবেশকে রক্ষা করার বিভিন্ন উপায় এবং অবলম্বন নিয়ে। তাদের কথাতেই উঠে এলো উন্নয়নের নামে যথেচ্ছভাবে প্রকৃতিকে নষ্ট করার ঘটনা। বিভিন্ন উপায় অবলম্বনের কথাও উঠে এলো তাদের বক্তব্যে।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি বললেন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে সে দেশের সরকার বাংলাদেশের সুন্দরবনের ভারসাম্য নষ্ট করছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, সেই সঙ্গে সরকারের কাছে বিভিন্নভাবেই সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পরও পরিবেশ রক্ষার কার্যকরী ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। তার বক্তব্য উঠে এলো এক সময় শস্য-শ্যামলা দেশ বাংলাদেশ এখন কৃষিকাজ বেশ সংকটে, প্রতিনিয়ত বৃক্ষছেদন এর ফলে দেশে বৃষ্টিপাত ব্যাপকভাবে কমেছে ফলে জলসেচ এবং কৃষিতে ব্যবহৃত জলের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বৃষ্টির জল ধরে রাখার যে প্রকল্প গুলি বাংলাদেশের সরকার নিয়েছিল, উষ্ণায়নের ফলে বৃষ্টিপাতের মান কমেছে যার ফলে জল সংকট তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

প্রতিনিধিদের কথায় মূলত একটি বিষয় উঠে এলো সেটা হলো যুবকদের ভূমিকা দেশ ও বিশ্বের পরিবেশ রক্ষায় যুবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন পরিবেশ রক্ষার কর্মসূচি সংঘটিত করলে যুবকদের মধ্যে তার প্রভাব পড়বে ভালোভাবেই এবং যার ফলে যুবকদের অংশগ্রহণে অবশ্যই এই বিশ্ব উষ্ণায়ন সহ দেশের পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বৃদ্ধি পাবে।

নেপালের প্রতিনিধিদের কথায় উঠে এলো এক উদ্বেগজনক দিক। বিশ্বের উষ্ণতা ১ ডিগ্রি বৃদ্ধি পাওয়াতে কৃষিকাজ কমেছে বিপুলভাবে। সেই সঙ্গে বৃক্ষছেদনের কাজ করছে কিছু মাফিয়া গোষ্ঠী। পাহাড়ে ঘেরা নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কাজ করছে কিছু মাফিয়া গোষ্ঠী। ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে বৃক্ষছেদন হচ্ছে যার ফলে এর প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর। বৃষ্টি কমে যাওয়ার কারণে কৃষি কাজে প্রভাব পড়ছে। সেই সঙ্গে তারা ঘোষণা করেছে নেপাল সরকার যুবকদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন রূপ নিরূপণ করতে ব্যর্থ হয়েছে যার ফলে দেশরক্ষার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

ভারতের প্রতিনিধির কথায় উঠে এলো, বিশেষত গ্রীষ্মকালে ভারতবর্ষের দক্ষিণ অঞ্চলের জল সংকট দেখা যায়। মূল বিষয়টি অগ্রাধিকার না পাওয়ায় বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে, জল সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে মারাত্মকভাবে। যদি বিষয় গুলিকে সঠিকভাবে সরকার ব্যবস্থা না নেয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি জল সংকট সারাদেশেই মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পাবে।

এই ইয়ুথ ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে বেশ উৎসাহ দেখা যায়। বিশেষভাবে সম্বর্ধনা দেয়া হয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠানটি সংগঠিত হলো নেপালের ইটাহারি শহরে। চেয়ারম্যান অভিনব চৌধুরীর কথায় ইয়ুথ ক্যাম্প মূলত বিভিন্ন দেশের মৈত্রী স্থাপনের একটি প্ল্যাটফর্ম, যাকে ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের মধ্যে শান্তি ও মৈত্রীর বাতাবরণ তৈরি করাই তার মূল লক্ষ্য।

ইয়ুথ ক্যাম্প থেকেই শপথ নেওয়া হলো পরিবেশ রক্ষার এবং পরিবেশ বান্ধব হওয়ার প্রয়াস করার। হয়তো এই ইয়ুথ ক্যাম্প থেকে এক নতুন দিশা পেল দক্ষিণ এশিয়া। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে কিন্তু ২০২০ সালে ইয়ুথ ক্যাম্প পরিণত হতে চলেছে এক বৃহৎ মহোৎসবে, উঠে এলো সেই কথা। হাজার যুবককে নিয়ে এক বিশ্ব মহোৎসব শামিল হতে চলেছে নেপাল ২০২০ সালে। নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ছাত্র যুব উৎসবের কথা ভাবা হয়েছে, সেই লক্ষ্যেই চেয়ারম্যানের বক্তব্য ও আবেদন সমস্ত দেশের প্রতি নিজের কাছেই আরো বেশি সংখ্যায় যুবক এবং নিয়ে তারা এই মহা উৎসবে শামিল হওয়ার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।