মল্লিকা গাঙ্গুলী, চিন্তন নিউজ, ৪ জুলাই: পশ্চিমবঙ্গ এখন দেশের অশান্তির রাজ্য বলে পরিচিত, আর বীরভূম বিস্ফোরণের কেন্দ্র। বারবার বীরভূমের এক একটি অঞ্চল কেঁপে উঠছে দুষ্কৃতিদের অপকর্মে। ২০১৭ সালের ২২শে এপ্রিল বালিঘাটের দখলদারিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাঁধে লাভপুরের মীরবাঁধ এবং দরবারপুর গ্রামে। সেই সংঘর্ষে বোমা বিস্ফোরনে ৯ জনের মৃত্যু হয়। তারপর আবার মল্লারপুরে ঘটে বিস্ফোরনের ঘটনা। আর এবার আবার লাভপুরেই ঘটে গেল এক ভয়ংকর বিস্ফোরন যাতে উড়ে গেল দাঁড়কা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দু দুটি ঘর।
তৃণমূলের সন্ত্রাসবাদের আখড়া হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সরকারি ভবন। এই সরকারী ভবনগুলিই যে তৃণমূলের গুলি বারুদের মজুত ভান্ডার তার প্রমাণ মিলল বুধবার রাতে। গতকাল মাঝরাতে লাভপুরের গ্রামীন হাসপাতালের পরিত্যক্ত আবাসনের ছাদ উড়ে গেল এক ভয়ংকর বিস্ফোরনে। এই আবাসনের অদূরে অবস্থিত একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, এই বিস্ফোরন দিনের বেলা হলে যে কত শিশুর প্রাণহানি ঘটত, একথা ভেবে এলাকাবাসী আতঙ্কিত!
এর পূর্বে লাভপুরের মীরবাঁধ এবং দরবারপুর দুর্ঘটনার পরেই দাঁড়কা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এই পুলিশ ক্যাম্পের পাশেই যে বিপুল পরিমাণ গোলা বারুদ বিস্ফোরক পদার্থ মজুত করা ছিল পুলিশ তা জানত না? এই বিস্ফোরনের তীব্রতা এতটাই প্রবল ছিল যে আশপাশের বাড়ীর ছাদে গিয়ে পড়ে কংক্রিটের টুকরো। বিস্ফোরনের খবর পেয়ে অবশ্য বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, এবং আশার কথা মাঝরাতে বিস্ফোরন ঘটে বলে কোনো নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেনি। এই বিস্ফোরনে হতাহতের কোনো খবর নেই।
লাভপুরের এবারের ঘটনা সাধারণ মানুষকে আশঙ্কিত করে তুলেছে। এলাকাবাসীর মতে বীরভূমে পরপর যে অপকর্ম মূলক ঘটনাগুলি ঘটেছে তা মূলত তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলের ফল। বুধবারের ঘটনাও তৃণমূলের কোন এক গোষ্ঠীর কাজ বলেই গ্রামবাসীর দাবি। শুধু লাভপুর ই নয়, বর্তমান শাসক শ্রেণীর গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কুফলে বাংলার মানুষ অতিষ্ঠ। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অশান্তির আগুন জ্বলছে, অথচ সরকার এই সমস্ত সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ রোধ করার কোনো উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে অক্ষম। বাংলার শান্তিকামী মানুষ লাভপুরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না!