শাশ্বতী ঘোষাল, চিন্তন নিউজ ১০ ই মার্চ :– এলাহাবাদ হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। গত বৃহস্পতিবার লখনৌ -এর বেশ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলির বিভিন্ন মোড়ে দেখা যায় বিশাল বিশাল হোর্ডিং । আর তাতে নাম ঠিকানা সহ সিএএ বিরোধী ৫৩ জনের নাম লেখা। ফৌজদারি অপরাধীর মতো রাস্তায় এই ভাবে ছবি দিয়ে বিশিষ্ট জনদের অপমান করা হচ্ছে বলে অনেকেই সরব হন। এরপর এলাহাবাদ হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। যেখানে সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে অথবা কারো প্রতি অন্যায় অবিচার হচ্ছে সেখানে আদালত অবশ্যই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতেই পারেন বলে এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর জানান। তিনি এই ঘটনাকে অত্যন্ত অন্যায় বলে মন্তব্য করেন ও উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন।
প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে যাবতীয় হোর্ডিং অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এই ঘটনাকে প্রশাসনের ” নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ মানুষের গোপনীয়তায় অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ” বলেছেন প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর। গত বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবির, কংগ্রেসের স্থানীয় মহিলা নেত্রী সদাফ জাফরের নাম, ঠিকানা সহ লখনৌয়ের রাস্তার মোড়ে মোড়ে হোর্ডিং গুলি দেখা যায়। যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের মতে এঁরা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে। আর তাই যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে তাদের ছবি এইভাবে জনসমক্ষে আনা হয়েছে। শুধু তাই নয় সিএএ বিরোধী কার্যকলাপ অর্থাৎ অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরে সরকারী সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার ফলে যা কিছু ক্ষতিপূরণ তা আদায় করা হবে হোর্ডিংয়ে উল্লিখিত বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গের কাছ থেকে।
প্রধান বিচারপতি মাথুর জানিয়েছেন ঐ ছবি টাঙিয়ে নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতা নষ্ট করা হয়েছে। সমস্ত ঘটনায় আদালত যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। প্রশাসনের কার্যকলাপকে আদালত নির্লজ্জ, অগণতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেছেন। যে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব তা না করে সরকার অগণতান্ত্রিক কাজের মাধ্যমে তাতে আঘাত করেছে। তাই আদালত থেকে সব হোর্ডিং সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং আগামী ১৬ই মার্চের মধ্যে হাইকোর্টের রেজির জেনারেলের কাছে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যোগী প্রশাসনকে। সদফ জাফর আজ বলেন আদালত দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। সংবিধানে আস্থা বেড়ে গেল। কবীর এই রায়কে নৈতিক জয় বলে মনে করেন ।এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে এসপি এবং বিএসপি।