কলমের খোঁচা

ব্যাঙ্ক ও বীমা কর্মচারীরা ধর্মঘটের পথে কেন?


গৌতম প্রামাণিক: চিন্তন নিউজ:১৬ই মার্চ:- গতকাল সারা দেশ জুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও ধর্মঘট পালন করে, আজও চলবে ১৮ই মার্চ বীমা ধর্মঘট।
কারণ– দেশের এই বিজেপি সরকারের বহুদিনের স্বপ্ন ও একান্তই ইচ্ছা রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রকে বেসরকারীকরণ করা!
বিগত নির্বাচনে ৩৩’০৩% ভোট পেয়ে দুই তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে তার প্রথম লক্ষ হলো সংসদকে শতাংশের ভিত্তিতে অপব্যবহার করে তার ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করা!! তারজন্য–
প্রথম কৌশল হলো স্বাধীন সংস্থা গুলোর স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনের ওপর অগণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার গলা টিপে একের পর জনবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
প্রথম ধাক্কা-
১) শ্রম আইন শিথিল।
২) কৃষি আইন সরকারী হস্তক্ষেপ বা দায়বদ্ধতা থেকে সরিয়ে কর্পোরেট ব্যবস্থার প্রবেশের।
৩) শিক্ষানীতির মধ্যে ধর্মীয়করণ ও কর্পোরেটিয়করণ।
৪) সুনির্দিষ্ট ভাবে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রকে বেসরকারীকরণের জন্য নির্দিষ্ট করা।
প্রথম সুযোগ পেলো অমানবিক ভাবে করোনা সংক্রমণ সময়কালে। ঐ লকডাউনের সুযোগে প্রথম বলি দিলো অসংগঠিত শ্রমিক শ্রেণীকে। লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎকে নস্যাৎ করে, সরকারি দায়িত্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে অসহায় অতিথি শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের পথে চলে গেলো! কর্পোরেট সংস্থা গুলো এই সুযোগে যথেচ্ছভাবে কর্মচারী ছাঁটাই করতে লাগলো।
এক দম বন্ধ অবস্থা দেশবাসীর, বিদ্যুতের, জালানির, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশ ছোঁয়া মূল্য বৃদ্ধি।
মানুষ যখন আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে লাগলো সরকার তখন সংঘটিত ক্ষেত্রে আক্রমণ নামিয়ে আনতে লাগলো। প্রথম পদক্ষেপ রেলের ধাপে ধাপে বেসরকারীকরণ, ফলে আঘাত আসলো রেল হকারদের ওপরে। আজকে তাদের নিদারুণ অবস্থা! আজও কর্পোরেট ব্যবসায়ে যুক্ত ছাঁটাই কর্মীদের যুক্ত করা হয়নি! এই অবস্থার ফলে ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র ঋণ করে ব্যবসা করবে কেউ কেউ চিন্তা করেছিলেন!! সে জায়গাতেও আজ অন্ধকার ঘনীভূত! কারণ, যে আর্থিক ব্যবস্থার ওপর আমার দেশের শিরদাঁড়া সোজা হয়ে আছে সেটাও চুরমার করে দিয়ে সেই রাষ্ট্র ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ, যেখানে গরীব খেটে খাওয়া মানুষ কষ্টার্জিত উপার্জনের অতি সামান্য পরিমাণ বীমা করে সংসারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতেন সেটাকেও বেসরকারিকরণ করার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে সরকার উদ্দোগ নিয়েছে!! তার প্রতিবাদে দেশের শ্রমিক সংগঠন (তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির শ্রমিক সংগঠন বাদ দিয়ে) আজকে ধর্মঘট পালন করছে। ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা সব ব্যাঙ্কের সামনে প্রতিবাদে ধর্ণায় বসেছে। যদি দেশের সরকার না শোনে তাহলে সব সংগঠন  লাগাতার ধর্মঘটের পথে যেতে বাধ্য হবে।
আসুন দেশের সরকারের এই চরম জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রমিক সংগঠন গুলোর পাশে দাঁড়িয়ে এই আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তুলি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।