রাজনৈতিক রাজ্য

পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি ও শ্রমজীবী নারীদের অধিকার রক্ষার লড়াই।


কৃষ্ণা দাশগুপ্ত: চিন্তন নিউজ: ৮ই মে:- আজ ৮ ই মে, পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠা দিবস। এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে সারা দেশে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা,, নারীর অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে নারীরা সংগঠিত হয় এবং ১৯৪৩ সালে বিশ্বযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের ভয়াল প্রেক্ষাপটে জন্ম নেয় বঙ্গীয় প্রাদেশিক মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি।দূর্বার জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির উদগ্র আক্রমণ এবং মনুষ্যসৃষ্ট মারণ দূর্ভিক্ষের মুখে দেশের চেতনাসম্পন্ন নারীরা যে সমিতি সংগঠিত করেছিলেন নানা ঘাত প্রতিঘাত রাজনৈতিক মতাদর্শগত লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে সারাভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি,, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। গনতন্ত্র- সমানাধিকার – নারীমুক্তির লক্ষ্যে অবিচল থেকে সর্বস্তরের নারীদের সংগঠিত করে চলেছে।

মহিলা সমিতির আন্দোলনের অন্যতম মূল গতিমুখ বরাবরই ছিল মেয়েদের কাজ এবং কর্মরত নারীর অধিকার। আমাদের পুরুষশাসিত সমাজে নারীর জন্য একান্ত ক্ষমতাগুলি পুরুষ শাসকের কুক্ষিগত। বহুমুখী প্রচেষ্টা ও আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশ, জাতি, ধর্মীয় সম্প্রদায় অনুসারে নারীর অবস্থানের বেশ কিছু হেরফের হ’লেও, সমাজে দ্বিতীয় সারিতেই নারীদের অবস্হান। দেশে শ্রমজীবি মহিলাদের বিরাট অংশ অসংগঠিত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বিশ্বায়ন ও উদারীকরনের ফলস্বরূপ সংগঠিত উৎপাদন ব্যবস্হার পরিবর্তে চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের বাজার প্রসারিত হয়েছে। এখানে নারী শ্রমিকরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ৯২% শ্রমিকের মধ্যে ৮০% মহিলা শ্রমিক। রাস্তা ঘাট তৈরী, পাথর ও কয়লাখাদান, ই‍ঁটভাটা, নির্মাণ কাজ, বিড়ি শ্রমিক থেকে মৎস্যজীবী, বাজারে সব্জি ও মাছ বিক্রি, কৃষি কাজ সহ বিভিন্ন কাজে অধিকাংশ মহিলা কর্মী। এর মূখ্য কারণ গুলির অন্যতম প্রধান কারণ মজুরি বৈষম্য। মহিলা শ্রমিকদের ২০ থেকে ৫০% মজুরি কম দেওয়া হয়। অথচ মহিলা শ্রমিকদের বাদ দিয়ে অর্থনীতি কে ভাবা সম্ভব নয়।

সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি সর্বদাই শ্রমজীবি মহিলাদের লড়াই আন্দোলনের পাশে আছে এবং তাদের সংগঠিত করতে সাহায্য করছে। আমাদের সংগঠন কর্মরত মহিলাদের যে দাবীগুলিকে সামনে রেখে তাদের সংগঠিত করছি সেগুলি হলো–
১) অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত মহিলাদের নথিভুক্ত করণ করতে হবে এবং তাদের কর্মী হিসেবে অধিকারগুলি রক্ষা করার জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
২) সম কাজে সম বেতন কার্যকর করতে হবে।
৩) আই . সি. ডি এস, স্বাস্থ্যকর্মী, মিড. ডে . মিল সহ বিভিন্ন প্রকল্প কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি, বোনাস ও পেনশনের দাবীকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
৪) কর্মস্থলকে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত করতে হবে।
আজ সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে আমাদের অঙ্গীকার লড়াই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মহিলাদের প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা —


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।