চৈতালী নন্দী, চিন্তন নিউজ, ৮ এপ্রিল: ভিয়েতনামে প্রথম করোনা আক্রান্ত সনাক্ত হয় জানুয়ারীর মাঝামাঝি। সেসময় চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০০০, মৃত্যু হয়েছে ১৭০ জনের। বর্তমানে এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০ এর কম, মৃত্যু নেই। কিভাবে সম্ভব হোলো এই অসাধ্য সাধন? পরিকল্পিত একটি ব্লুপ্রিন্টই তাদের এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাফল্য এনে দিয়েছে।
প্রথম রোগীটি সনাক্তকরণের পরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়ে যায় ঘরে ঘরে সচেতনতার প্রচার এবং কি কি করণীয় বা করণীয় নয় তার বিস্তারিত সূচী। ভিয়েতনামে লোকসংখ্যা ১০ কোটির কাছাকাছি। এইভাবে কোন পরিবারকে বাদ না দিয়ে এই প্রচার খুব সহজ কাজ ছিলনা। প্রসঙ্গত উল্লখ করা যায় ভিয়েতনামের মতো পরিচ্ছন্নতা বোধ খুব কম দেশেরই আছে। সবকিছু ঝকঝকে ছবির মতো। এরপরই বন্ধ করে দেওয়া হয় আক্রান্ত দেশগুলির থেকে আসা মানুষজনকে। দোকান বাজার খোলা থাকলেও বন্ধ করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মিউজিয়াম ও দর্শনীয় স্থানগুলিকে।এখানে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই উন্নত ও মানবিক মানসম্পন্ন। যা এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুকে আটকে রাখতে পেরেছে তা হলো প্রত্যেক জনবহুল স্থান সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সন্দেহজনক সবাইকে খুঁজে বার করার ব্যাপারে নিখুঁত অনুসন্ধান। এর মধ্যেই এরা তৈরী করে ফেলেছে কম খরচের একটি কিট যা তারা আক্রান্ত দেশগলিকেও রপ্তানি করছে। যদিও আর্থিক ক্ষমতা সীমিত তবুও আন্তরিক সদিচ্ছার অভাব নেই। এরপর আক্রান্ত অনুযায়ী স্থানীয় স্তরে নিয়ন্ত্রিত লকডাউন সিদ্ধান্ত এবং কোয়রান্টিন যা অত্যন্ত স্বাস্থ্য সম্মত। রয়েছে রাস্তাঘাট, গণপরিবহন গুলি জীবাণু মুক্ত করা। এছাড়াও ছিল সুচিকিৎসা যা জিতে যাওয়ার পক্ষে খুব কঠিন নয়।
নোভেল করোনা ভাইরাস এতটাই ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে যে সামান্য অসাবধাতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। ভিয়েতনামের গড়ে তোলা এই স্বাস্থ্য প্রতিরক্ষা, যা দরিদ্র দেশ হওয়া সত্বেও পাল্লা দিতে পারে বড় দেশগুলোর সঙ্গে। ভারতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র দূর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নয়, পরিকল্পনা হীনতা, সদিচ্ছা ও বিজ্ঞানমনষ্কতার অভাব ও সহজে বাজিমাত করার প্রবণতা বর্তমানে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে স্টেজ থ্রির দিকে। এখন অতিথি আপ্যায়নে নিয়ে আসা সংকটকে ঠেকানো বড়ই কঠিন।