রাজ্য

রবীন্দ্র ভারতী প্রসঙ্গে…


দেবু রায়: চিন্তন নিউজ:১৪ই মার্চ:- গত দুদিন আলোচনা হয়েছে যে , বাংলায় আজ চরম সংস্কৃতির অবনমন ঘটেছে তার পিছনে আছে সামাজিক , অর্থনৈতিক পরিবর্তন। আর একটা পরিবর্তনও সমান ভাবেই দায়ী সেটা হলো রাজনৈতিক পরিবর্তন।

প্রথম সংস্কৃতির অবমূল্যায়ণ শুরু হয় যেদিন থেকে রাজনৈতিক পরবর্তন শুরু হয়। তার প্রথম বহিঃপ্রকাশ হয় সেই দিন যে দিন আরাবুল ইসলামের মতো নেতা একজন শিক্ষিত অধ্যাপককে জগ ছুড়ে মারেন। হ্যাঁ যুক্তিতে তার অনেক শাস্তি হয়েছে ( বাস্তব যাই হোক না কেন )। তার পর থেকে ক্রমান্বয়ে শাসক এবং বিরোধী নেতাদের উত্তেজক বক্তৃতা যেমন বোম মারুন, গুলি করুন, উত্তরপ্রদেশ থেকে ছেলে এনে কুকুরের মতো মারবো, এগুলো কি কোনো সুস্থ্য সমাজের লক্ষন হতে পারে ?. এযেন দুটি দলের মধ্যে প্ৰতি যোগিতা হচ্ছে কে কত শব্দ সন্ত্রাস করতে পারে!
এবার ভাবা প্রয়োজন, এগুলো দেখে বাচ্চারা কি শিখবে?. তারই ফলপ্রকাশ হলো বাচ্চা – বাচ্চা ছাত্রীদের ঐ গান , অথবা রবীন্দ্র ভারতীতে মহিলাদের পিঠে কিছু অশ্লীল শব্দ লিখে নাচ।

যদি নেতাদের মধ্যেই শালীনতার সীমা না থাকে , রাজনীতির স্বার্থে যদি তারা প্রশ্রয় দেয়, তাহলে সেই সমাজে বিদ্যাসাগর এর মূর্তি ভাঙবে না তো কি হবে?. রবীদ্রনাথকে নিয়ে অশ্লীলতার মেলবন্ধনকে বিদ্রুপ করা হবে এর আর বিচিত্র কি?. তার সঙ্গে মিডিয়াগুলোকে তারা যখন এই বিষয়ে কোনো আলোচনা করে তখন বক্তা হিসাবে যারা আসেন শোনা যায় তারা নাকি কেউ শিক্ষক ( কলেজ বা স্কুলের ) তা সেই মহান শিক্ষিত বক্তাদের কাজ কি ?. ওনারা মূল বিষয়ে যাবার আগে বলার আগে মহান কোনো দার্শনিকের দু – একটা লাইনের উদ্ধৃতি দিয়ে শুরু করেন, তারপর একটা অন্যায়কে জাস্টিফাই করার জন্য অন্য কোথাও ঘটে যাওযা আরও দু’ তিনটি উদাহরণ টেনে আনবেন , কেউ আবার ইতিহাস টেনে মানে ১৭৬১ সালে পানিপথের যুদ্ধর পর থেকে অন্যায় , তাকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করবেন , আর অন্যদের বক্তৃতা তথা ঝগড়া টা এমন কুরুচিপূর্ণ যে পঞ্চাননতলার রেল বস্তির লোকেরাও ঝগড়া করার সময় ওপর পক্ষকে সন্মান দিয়ে ঝগড়াটা করে ,

এক – এক সময়ে ভাবাই, এরা কি সত্যিই শিক্ষক ?. যাদের বিতর্ক করার স্ট্যান্ডার্ড, পঞ্চাননতলার রেল বস্তির থেকেও খারাপ, এদের থেকে এই প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীরা কি শিখবে ?. আর শিক্ষকদের এই স্ট্যান্ডার্ড হলে সেখান থেকে রোদ্দুর রায় বেরুবে না তো কি সত্যজিৎ রায় বা বিধান রায় বেরুবে আবার বিচারের ভারটা মানুষের। . .


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।