দেশ

*করোনা রুখতে মাস্কের বদলে গামছা !! নতুন নিদান দেশের সর্বোচ্চ শাসকের


মল্লিকা গাঙ্গুলী: চিন্তন নিউজ:১৫ই এপ্রিল:- বিশ্ব জুড়ে করোনা কোভিড- ১৯ অতিমারির দাপটে মানুষ যখন দিশেহারা তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী দফায় দফায় ভাষণ দিয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত নির্দেশ জারি করছেন! করোনা সংক্রমণ রোধে গৃহবন্দি ও সামাজিক দূরত্বই একমাত্র উপায় একথা এখন আপামর বিশ্ববাসী জানে। দেশে গত তেইশে মার্চ সরকারি ভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এই জরুরি পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বার বার দেশবাসীকে সচেতন থাকতে, মাস্ক ব্যবহার করতে, এবং সামাজিক দূরত্ব রাখতে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ গুলি নিঃসন্দেহে দেশনায়কের উপযুক্ত কাজ।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী লক ডাউন ঘোষণা করার পর দফায় দফায় দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে যে সমস্ত অপ্রত্যাশিত নির্দেশ দিলেন তা গ্রহণযোগ্য নয়! প্রথম ভাষণে দেশবাসী যখন অধীর আগ্রহে মহামারী মোকাবিলার সুরাহা পাওয়ার জন্য অপেক্ষারত তখন তিনি বললেন স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহিত করতে নির্দিষ্ট সময়ে কাঁসর ঘন্টা শঙ্খ বাজাতে, দ্বিতীয় দিন বললেন আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে, যার ফল হলো বিপরীত! হুজুগে মানুষ উভয় ক্ষেত্রেই সামাজিক ব্যবধানের কথা ভুলে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলল!

চারিদিকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যু ভয়ংকর ভাবে বেড়ে যাওয়ায় চোদ্দ এপ্রিল একুশ দিনের ঘোষিত লকডাউন এর শেষের দিন বাধ্য হয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী লকডাউন তিন মে পর্যন্ত বাড়াতে নির্দেশ দিলেন। আর এই দিনই তার বিশেষ ঘোষণা মাস্ক না হলেও অসুবিধা নেই, গামছা দিয়ে মুখ ঢাকলেই চলবে। শুধু বলেই ক্ষান্ত হননি নিজে একটি দামী কাজ করা গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে জনগণকে বোঝালেন আপনি আচরি ধর্ম….!

এর আগে বেনারসে পার্টি প্রচারে গিয়েই তিনি বিহার ও উত্তর প্রদেশের মানুষদের মতো ঘাড়ে রাখা গামছা দিয়ে মুখ ঢেকেও করোনা মোকাবিলা করা যায়, পয়সা দিয়ে ডাক্তারী মাস্ক না কিনলেও চলে বলে বক্তব্য রাখেন। এবার তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় সেটি নিজে ব্যবহার করে বুঝিয়েও দিলেন।বেনারসের সভার গামছা প্রসঙ্গ মানুষ কৌতুক বলেই গ্রহণ করেছিল, মনে করেছিল হয়তো উত্তর প্রদেশের ভোটারদের খুশি করতে বিজেপির উচ্চ নেতৃত্বের এহেন বক্তব্য।

কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রী দেশের সংকটকালে দেশবাসীকে আশ্বস্ত না করে যখন বৈজ্ঞানিক মাস্কের বদলে গামছা ব্যবহারের মতো নির্দেশ দেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে দেশে কি এখনই মাস্কের যোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে অথবা সরকার মাস্কের উৎপাদন না করে মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন?দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশাসনিক প্রধানদের আরও অনেকবেশি দায়িত্বশীল আরও সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এখন অর্থনীতি, শিক্ষা, সমাজ সংস্কৃতি, সব দিক থেকে সরকার এবং আপামর জনগনের দৃষ্টি থাক চিকিৎসা এবং স্বাস্থের দিকে। যেভাবে হোক যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করে করোনা বা কোভিড ঊনিশ অতিমারি মুক্ত এক সুস্থ ভারতভূমির প্রতীক্ষায় সমগ্র জাতি। তাই কোনো রকম অসচেতনতা অসাবধানতা নয়, বিজ্ঞান সম্মত মাস্ক ব্যবহার , সঠিক সেনিটাইজেশন, এবং সর্বোপরি সমাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরবন্দি জীবন মেনে করোনা কে জব্দ করতে না পারলে দেশ তথা জাতির মুক্তি নাই! সরকারি বেসরকারি ব্যক্তিগত সমষ্টি গত উদ্যোগে দেশ কে করোনা মুক্ত করে আবার সুস্থ সুন্দর সমৃদ্ধ দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা টাই হোক পাখির চোখ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।