দেশ

ভারতের পরাধীনতা ( ১৭৫৭- ১৯৪৭) , স্বাধীনতা আন্দোলন এবং মুক্তিকামী ভারতবাসী- র অংশগ্রহন এর স্বল্প প্রচারিত কিছু তথ্য।আজকের বিষয় : পরাধীন ভারতের প্রথম বিদ্রোহ ।*


রঞ্জন মুখার্জি:চিন্তন নিউজ:১৫ই এপ্রিল:- ভারতের পরাধীনতার কাল ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত । ১৭৫৭ সালের আগে ব্রিটিশরা ভারতে ছিল ব্যবসায়িক এক কোম্পানি হিসাবে। নাম-ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ব্যবসার প্রয়োজনে তারা ভারতবর্ষকে নানা ভাবে শোষণ করলেও , সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করলো ১৭৫৭ তে বাংলার পলাশীতে। বাংলার নবাব সিরাউদ্দৌলাকে পরাজিত করা এবং ক্ষমতা দখলের মধ্যে দিয়ে। সেদিন বিশ্বাসঘাতকতা এবং ছল চাতুরীর মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে র সূচনা হলো।

আর এর পরে পরেই শুরু হয় ব্রিটিশদের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিরোধ সংগ্রাম । এই প্রতিরোধের কারণ গুলো ছিল নানা প্রকারের , নানা স্বার্থের । কিন্তু ভারতের সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, আদিবাসী , কৃষক, দেশীয় সেনাবাহিনী থেকে পদচ্যুত সৈনিক , ক্ষমতা চ্যুত রাজা মহারাজা কোনো না কোনো সময়ে বিদ্রোহ করেছে এই ব্রিটিশ প্রভু দের বিরুদ্ধে । পরাধীনতার পর প্রতিরোধের প্রথম মশাল জ্বালালেন বাংলার তৎকালীন নবাব মীরকাশিম ।

১৭৬০ এ বাংলার নবাব এর গদিতে বসেই মীরকাশিম অনুভব করলেন , বাংলার কৃষক সমাজ, তাঁতী, বণিক সবাই ব্রিটিশ শাসনে অতিষ্ঠ।কলকাতায় ইংরেজ বড় কর্তা ভ্যানসিটার্টকে এক চিঠিতে মীরকাশিম লিখলেন “তোমাদের কর্মচারীরা চাষীদের কাছ থেকে জোর জবরদস্তি করে জিনিসপত্র কেড়ে নিচ্ছে । হয় দাম দিচ্ছে না , না হয় কম দাম দিচ্ছে। এই ব্যবস্থা বন্ধ হোক।”মীরকাশিম এর প্রতিবাদে কর্ণপাত করলো না ইংরেজরা। ১৭৬৩তে ফরমান জারি করে নবাব বাতিল করে দিলেন আভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের ওপর সমস্ত শুল্ক। দেশী বণিকরা সুযোগ পেল ইংরেজ বণিকদের সঙ্গে সমানে সমানে পাল্লা দিতে।

ফলে ইংরেজদের সঙ্গে নবাবের যুদ্ধ বাঁধলো। দুর্ভাগ্যক্রমে ১৭৬৪ সালের বক্সারের যুদ্ধে মীরকাশিম, অযোধ্যার নবাব ও দিল্লির পলাতক বাদশাহ দ্বিতীয় শাহ আলম এর যৌথ সেনা দল। ণতি স্বীকার করলেন অযোধ্যার নবাব ও শাহ আলম । পরাজিত হ’লেও ইংরেজদের কাছে নতি স্বীকার করলেন না মীরকাশিম । পালিয়ে গেলেন সপরিবারে উত্তরপ্রদেশের রহিল খন্ডের বিদ্রোহীদের এলাকায়।
যতদিন বেঁচে ছিলেন মীরকাশিম , ততদিন তিনি চেষ্টা করেছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভারতে একটা জোট গড়ে তুলতে । সঠিকভাবেই তাকে বলা হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পরাজিত কিন্তু মহান সৈনিক।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।