দেশ

বান্দ্রাতে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নৃশংস লাঠি চার্জ বাসের ব্যবস্থা নেই কেন, প্রশ্ন ইয়েচুরির


কল্পনা গুপ্ত, চিন্তন নিউজ – ২৪ শে মার্চ কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণার পর পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে যাবার জন্য উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েন ও বিভিন্ন পথ দিয়ে তারা হেঁটে হেঁটেই বাড়ি ফিরে যেতে থাকেন। লকডাউন ওঠার মেয়াদ ছিলো ১৪ ই এপ্রিল। বেশকিছু পরিযায়ী শ্রমিক আটকে ছিলেন মহারাষ্ট্রর বান্দ্রা অঞ্চলে। আজ আচমকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লকডাউনের সময় বাড়িয়ে ৩রা মে করেন। এর ফলে ওই শ্রমিকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বাড়ি ফেরার জন্য রাজধানীর বুকে। তারা বাড়ি ফেরার আশায় তল্পিতল্পা গুছিয়ে বাস টারিমুনালে এসে জড়ো হয়েছিলেন।কয়েক হাজার মানুষ। দিল্লির আনন্দবিহার টারমিনালের সেই স্মৃতি উস্কে এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে উঠলো বাণিজ্য নগরী মুম্বাইয়ে। পরিযায়ী শ্রমিকরা এই দাবি নিয়ে রাস্তায় নামেন হয় তাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হোক না হয় পেট ভরানোর ব্যবস্থা করা হোক।
লকডাউন থাকা সত্ত্বেও দেশে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫০ জন। তারই জেরে এই দ্বিতীয় দফায় লকডাউন ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর। লকডাউন উঠতে পারে এই আশায় দুপুরের দিকে বান্দ্রা স্টেশনের বাইরে বাস ডিপোয় জড়ো হয়েছিলেন কয়েকশো মানুষ। ভেবেছিলেন ট্রেন বা বাস চলবে। তা না হওয়াতেই তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাদের হটাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
মূলত উত্তরপ্রদেশ ও বাংলা থেকে আসা এই শ্রমিকেরা সকলেই দিনমজুর। দুপুর তিনটে নাগাদ বান্দ্রা স্টেশনের কাছে বাস ডিপোয় প্রায় ১০০০ জন জড়ো হন। তাদের বাড়ি ফেরার বাসের ব্যবস্থা দাবি তুলে তারা রাস্তার উপরেই বসে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধ্বব ঠাকরের ছেলে মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে ট্যুইটারে লেখেন, ” বান্দ্রা স্টেশনে যা ঘটলো তা যদিও থামানো গিয়েছে, কিন্তু এই ঘটনা ও সুরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙার ঘটনা- সবই কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে পারেননি তারা। খাবার বা আশ্রয় নয়। এই শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরতে চান।”
দলের মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ও বলেন, ” গত তিন সপ্তাহ ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে আসছিলের এরা কিন্তু সরকারকেও ওদের সমস্যাকে বুঝতে হবে। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও আর্থিক দিকটা দেখলেই চলবে না। মানবিকতার দিকটাও দেখতে হবে।”
শুধুমাত্র মুম্বাই নয়,গত তিন সপ্তাহ ধরে লকডাউনের জেড়ে দেশের বিভিন্ন অংশে আটকে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। রোজকার নেই, দুবেলা খাবারও পাচ্ছেন না। সরিকারের সাহায্যের আশ্বাস থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা মেলেনি বলে অভিযোগ উঠছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৩৩৭।
সিপিআই (এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কেন্দ্রের অপরিকল্পিত লক ডাউনের তীব্র সমালোচনা করে টুইট করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ধনী গুজরাটি বন্ধু এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করতে পারেন অথচ অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একই ব্যবস্থা করলেন না কেন!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।