রঘুনাথ ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ:৮ই এপ্রিল:- কথায় আছে, দুর্ভিক্ষে, রাষ্ট্রবিপ্লবে, রাজদ্বারে, শ্মশানে, যিনি পাশে থাকেন , তিনিই বন্ধু।
একথা আরও একবার চাক্ষুষ করলেন মানুষ করোনার দৌলতে। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবার যে বিনিদ্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সিপিএম ছাত্র-যুবরা অত্যন্ত সুসংগঠিত ভাবে, সেটা সত্যিই দৃষ্টান্তমুলক।
জেলায় জেলায় কর্মীরা ঘড়ির কাঁটা ধরে সাহায্যহীন নিরাশ্রয় গ্রামীন জনতার কাছে বিভিন্ন সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন। বামপন্থী কর্মী সংগঠন আজ দরিদ্র জনতার আত্মার আত্মীয়। দুএকটি উদাহরন দিয়েই পূর্ণ চিত্র উঠে আসে।:
পূর্ব মেদিনীপুরের রেড ভলান্টিয়ার্স। প্রয়োজনীয় যে কোন জিনিস, তা ওষুধ হোক বা খাদ্য, শুধুমাত্র একটা ফোনের অপেক্ষায়। কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে গিয়েও পৌঁছে দিচ্ছেন রেড ভলান্টিয়ার । রাত দশটায় ফোন পেয়ে তমলুক থেকে ওষুধ জোগাড় করে সতের কিলোমিটার দূরে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে এলেন এক বামপন্থী রেড ভলান্টিয়ার।
পাশকুড়ার প্রায় শতাধিক পরিবারের ও মেচেদা স্টেশনের ভবঘুরেদের হাতে খাদ্য তুলে দেওয়া হয়। কোলাঘাট ,ময়নার গ্রামে গ্রামে হাত ধোয়ার সাবান বিলি করেন যুবকর্মীরা। এছাড়াও মুমূর্ষু রোগীর শুশ্রূষার জন্য পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা। ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতালে, ব্লাড ব্যাঙ্কে। জেলার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশু ভর্তি হয়েছে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে। কোথায় পাওয়া যাবে রক্ত ? খবর পেয়ে রেড ভলান্টিয়ার যুবকর্মী গিয়ে রক্ত দিলেন। তমলুক ব্লাড ব্যাঙ্কে বার জন এআইওয়াইএফ্ কর্মী রক্তদান করেন। এছাড়াও, বালিসাই রেড ভলান্টিয়ারদের ও রাজ্য -কোঅর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে তমলুকের দুঃস্থদের হাতে খাদ্যবস্তু তুলে দেওয়া হয়।
পরিযায়ী শ্রমিকদের আশ্রয় ও সাহায্যের দাবিতে পটাশপুর ও সুতাহাটা ব্লক কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয়।
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নৈহাটি দেশবন্ধু এলাকায় অন্তত ৪০০ পরিবারের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেন যুবরা।সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে নৈহাটি নিষিদ্ধ পল্লীর পঞ্চাশ জন মহিলাকে দেওয়া হয় খাদ্যসামগ্রী, স্যানিটারী ন্যাপকিন,সাবান।নোয়াপাড়া থানার পুলিশ কর্মীদের হাতে দেওয়া হয় মাস্ক, স্যানিটাইজার। সিআইটিইউর উত্তর ২৪ পরগণার জেলা কমিটির পক্ষ থেকে।সাফাই কর্মীদের হাতে খাদ্য দেওয়া হয় কাচরাপাড়ায়। খাদ্য দেওয়া হয় সাড়েতিনশ পরিবারকে ব্যারাকপুরের পানপাড়ায়।
সিপিএমের তরফে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয় ভাটপাড়া কাকিনাড়া বাজারের ২০০পরিবারকে, জগদ্দল স্টেশন সংলগ্ন বস্তি এলাকার ৫০ জন, নারায়নপুর সুভাষপল্লীর ৫০ পরিবারকে। এরকমই সাহায্য করা হয়েছে খড়দহ-টিটাগড় এরিয়া কমিটির তরফে স্থানীয় ২০০পরিবারকে।
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিঙ লাইনে তালদি স্টেশন প্লাটফর্মে চলছে খাবার বিতরণ ২০০ মানুষের কাছে ২৬শে মার্চ থেকে যুবদের সাহচর্যে।
উল্লেখযোগ্য,যে এই যুবদের সাহায্য যোগাচ্ছেন বহু স্থানীয় সাধারন মানুষ। তাঁরা চাঁদা তুলে যোগান দিচ্ছেন ঐ যুবদলের হাতে। লকডাউনে স্টেশন সংলগ্ন এলাকার দিনমজুর ও শ্রমিকদের কাজ নেই, অর্থাৎ কোনো আয়ের সংস্থান নেই। অনাহারে দিন কাটছিল।তাই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এক মহান দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই বামপন্থী যুবরা।