বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

গুয়াহাটি আইআইটি’ র নয়া সাফল্য: চোখের নিমেষে নির্বিষ এলাকা


স্বাতী শীল: চিন্তন নিউজ:৯ই এপ্রিল:- হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের আইসোলেশন বিভাগে মানুষের পরিবর্তে রোবট গাড়িতে করে খাবার পৌঁছে দেওয়ার মত অভিনব পদ্ধতি কোন নতুন বিষয় নয়। ইতিমধ্যেই তা বেশ উপযোগী ভাবে কার্যকরী হয়েছে। এবার এক নতুন চমক নিয়ে হাজির গুয়াহাটি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি।

এদের নবতম অবদান ইউ ভি সি লেড যুক্ত স্যানিটাইজেসন ডিভাইস, যা যেকোন মসৃণ পদার্থ বা জিনিস অথবা যেকোন বড় এলাকা নিমেষে স্যানিটাইজ করতে সক্ষম।

গুয়াহাটি আইআইটির এই প্রজেক্টে রয়েছেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক গবেষক ডক্টর সেন্থিলমুরুগান সুব্বিয়া।এই প্রজেক্টে গুয়াহাটি আইআইটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেঙ্গালুরুর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাও।

আইআইটি গুয়াহাটির ডিরেক্টর টি জি সীতারাম বলেছেন, যে কোন সংক্রামক ভাইরাস বা ওই জাতীয় প্যাথোজেন ছড়িয়ে আছে এমন যেকোন স্থান বা বস্তুকে জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে ইউ ভি সি ডিভাইস বরাবরই খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এসেছে। এবার সেই প্রযুক্তিকেই নতুনভাবে কাজে লাগিয়ে এই স্যানিটাইজার ডিভাইস তৈরি করা হয়েছে।একটি নির্দিষ্ট মাত্রার ডোজ প্রয়োগ করে মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যেই যেকোনো ছোট অথবা বড় এলাকাকে জীবাণুমুক্ত করার ক্ষমতা রয়েছে এই ডিভাইসের। তিনি আরো বলেন যে সরকারি নির্দেশে থ্রিডি টেকনোলজির ভিত্তিতে হাসপাতাল চত্বর,আইসোলেশন ওয়ার্ড, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, দোকান বাজার সহ যেকোনো বড় এলাকাকে অতিদ্রুত স্যানিটাইজ করার জন্য ডিভাইসটি বানানোর ক্ষেত্রে একটি প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরি করা হয়েছে।এখনও পর্যন্ত ম্যানুয়ালি কাজ করলেও পরবর্তীতে রোবট দ্বারা এই ডিভাইসটি চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক সুব্বিয়া বলেছেন যে যেকোনো মসৃণ,অমসৃণ পদার্থ বা ঘরের মেঝে,দেওয়াল সবকিছুর ওপরই নির্দিষ্ট ডোজে মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময়ের পরিসরেই সমানভাবে কার্যকর এই ডিভাইস।আর এর বৈশিষ্ট্য হলো জীবন্ত জিনিসের নড়াচড়া শনাক্ত করতে পারে।তাই এই ডিভাইস পরবর্তীকালে যদি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেও চলে সে ক্ষেত্রে স্যানিটাইজ করার ক্ষেত্রে মানব শরীর এড়িয়ে চলতে সক্ষম হবে।

গুয়াহাটি আইআইটির তরফে বলা হয়েছে খুব কম খরচেই এই আল্ট্রাভায়োলেট স্যানিটাইজিং ডিভাইস তৈরির কাজ চলছে।আপাতত ৫০০০ ডিভাইস বানানোর কাজ চললেও সরকারি অনুমোদন পেলে আরো বেশি সংখ্যক ডিভাইস তৈরি করা যাবে। এছাড়াও বিশেষ অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল কোটিং দিয়ে পিপিই তৈরীর পাশাপাশি ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য বিশেষ ফেস মাস্ক,ফেস শিল্ড ও হেড গিয়ার তৈরি করা হচ্ছে।আইসোলেশন ওয়ার্ডে নার্সদের বারবার যাতায়াত কমাতে গুয়াহাটি আইআইটির মেকানিক্যাল ও টেকনিক্যাল বিভাগের পড়ুয়ারা মিলিতভাবে তৈরি করেছে দুটি রোবট। তাদের মতে ক্যাম্পাসে মহড়া চলছে এই দুই রোবোটের,যা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে। দুটির একটি পৌঁছে দেবে খাবার ও ওষুধ, অন্যটির কাজ হবে আসলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।