সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২৬ জুন: এখন তৃনমুল কংগ্রেসের ছন্নছাড়া দশা। “কাটমানির টাকা ফেরত” প্রসঙ্গে এই ছন্নছাড়া দশা। কাটমানি নিয়ে বিরোধীরা সরব হলেও দলের বিধায়করা এই নিয়ে মুখ খোলেন নি বা ছন্নছাড়া কথাও বলেন নি। কিন্তু দলের মহাসচিব ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জী নিজেই এই “ছন্নছাড়া” নিয়ে মুখ খুলে বিতর্ক তৈরী করে দিলেন।
মঙ্গলবার বিধানসভায় পার্থ বাবু বলে বসেন “অনেকেই ভাবছে তৃনমুল ছন্নছাড়া হচ্ছে। শাসক দল ছন্নছাড়া হবে না। মানুষের সেবক হয়ে কাজ করে যাবে।” তিনি মমতা ব্যানার্জী সরকারের ডানহাত – মহাসচিব – গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, তার চেয়ে আর কে ভাল বুঝবে দলের অবস্থা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয়ে গেছে। একের পর এক বিধায়ক অন্য দলে চলে যাচ্ছে। সরকার পক্ষকে বোঝাতে হচ্ছে দল ছেড়ে না যাবার কথা। দল কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায় সেই নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে। করুণ পরিস্থিতি।
বিধানসভা চত্ত্বরেই বিধায়করা উগরে দিচ্ছে ক্ষোভ। যারা দলে আছেন তারা এই ভেবে শঙ্কিত কি হবে আগামী দিনে? গত আট বছর ধরে লাগাতার তোলাবাজি চালিয়ে এখন গ্রামের নেতারা এলাকাছাড়া। নেতাদের এখন জরিমানা দিয়ে গ্রামে থাকতে হচ্ছে। বিধায়কদের সেই তুমুল হম্বিতম্বি উধাও। তার মধ্যে নতুন আতঙ্ক কাটমানি ফেরতের প্রসঙ্গ। অগত্যা পার্থ বাবুকেই মাঠে নেমে দলের ছন্নছাড়া অবস্থাকে সামাল দেওয়ার কথা বলতে হল।
প্রশ্নোত্তর পর্বে কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন যে কন্যাশ্রী, প্রাইমারি তে চাকরী, সমব্যাথি প্রকল্প গুলিতে দেদার টাকা লুঠ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেই টাকা ফেরতের কথা বলেছেন। আর তা বলার পর থেকেই চলছে বিভিন্ন এলাকাতে গন্ডগোল। সবাই টাকা ফেরত চাইছে। মঙ্গলবার বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস দুদলই সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “কাটমানি সিএম”। এর পরই পার্থ চ্যাটার্জী বলেন যে মুখ্যমন্ত্রীর সামান্য একটা কথাকে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। একটা ভাল উদ্যোগকে বিকৃত ভাবে দেখা হচ্ছে। আসলে অনেকেই ভাবছেন তৃনমূল দল ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। কিন্তু তার মতে শাসক দল ছন্নছাড়া হয়নি।
বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবীকেও কটাক্ষ করেন তৃণমূলের মহাসচিব। বলেন বামফ্রন্ট কটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল? এর উত্তরে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পার্থ চ্যাটার্জীরা ১৮ টা কমিশন তৈরী করেছিলেন। আমরা চ্যালেঞ্জ করছি সেই কমিশন গুলির রিপোর্ট সামনে আনুন। সরকারি টাকাতে কমিশন গড়েছেন। মানুষের টাকাতে কমিশন গড়ে কি কাজ করল তা মানুষকে জানাচ্ছেন না কেন? আসলে অসততায় ভরা তৃনমূল কংগ্রেস।”