কল্পনা গুপ্ত:চিন্তন নিউজ: ৭ জানুয়ারি,২০২১: – আজ আমেরিকার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে জয়ের শংসাপত্র পাওয়ার কথা সদ্য নির্বাচিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গ কমলা হ্যারিসের। ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ এবং সেনেটের যৌথ অধিবেশন চলছিলো। এই প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ে কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক নজিরবিহীনভাবে হামলা চালায়। এতে ১ জন মহিলা সহ চারজন ট্রাম্প সমর্থকের মৃত্যু হয়। ট্রাম্পবাহিনীর তান্ডবে উত্তাল ওয়াশিংটন। সেখানে এর জেরে প্রায় লকডাউন জারি করতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন পুলিশ। ফ্লোরিডা সহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পরে। গণতন্ত্রের এই ভয়ানক লজ্জাজনক অবমাননায় স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক টুইট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আমেরিকাবাসীর স্মরণে আসেনা এমন ঘটনা কখনও ঘটেছে কিনা।
প্রসঙ্গত ৩রা নভেম্বর ২০২০ তে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর দু’মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ট্রাম্প পরাজয় মেনে নিতে পারছিলেন না। এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোট পেয়েছিলেন ২৩২ এবং জো বাইডন পেয়েছিলেন ৩০৬। ট্রাম্প ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে একাধিক মামলাও করেন। প্রকাশ্য জনসভায় ট্রাম্প বলেন, ” আমরা পিছু হটবো না।” আমেরিকা বাঁচাও নামে এই জমায়েতে উপস্থিত হয়েছিলেন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক।
ঘটনায় উদ্বিগ্ন জো বাইডেন বলেন, ” ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের ঘটনা আমেরিকার সত্যিকারের ঘটনা হতে পারেনা। কিছু উগ্র মনোভাবাপন্ন মানুষ একাজ করেছেন।” ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেন, ” মার্কিন কংগ্রেসের চরম লজ্জার ঘটনা।” কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ” গণতন্ত্রের ওপর হিংসাত্মক আক্রমণ হয়েছে। ”
বারাক ওবামা ” দেশের লজ্জা” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে এরজন্য ট্রাম্পকে দায়ী করে বলেছেন, ” উস্কানি তিনিই দিয়েছেন, এই হিংসা তার ফল।”
জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাস ট্রাম্প সমর্থকদের ” গণতন্ত্রের পদদলন বন্ধ” করার অনুরোধ জানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে জানান, ” গণতন্ত্র হিংসার ঘটনাকে সমর্থন করেনা। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হওয়া উচিত। ওয়াশিংটনের ঘটনা লজ্জাজনক। ”
রাজনৈতিকভাবেই এই ঘটনার নিন্দা করেছে সারা বিশ্ব। এই ঘটনায় এই পর্যন্ত ৫২ জন ট্রাম্প সমর্থক গ্রেফতার হয়েছে।
কিন্তু এতো করেও শেষরক্ষা হ’ল না ট্রাম্পের। অবশেষে জয়ের সিলমোহর পেলেন জো বাইডেন। তেসরা নভেম্বরের ভোটে যে জো বাইডেনই জিতেছেন, সেটা এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা হয় মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে । ঘোষণা করেন মার্কিন উপ-রাষ্ট্রপতি মাইক পেন্স। এরপরেই হার স্বীকার করে নেন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই সবের আগে এক প্রস্ত নাটক হল মার্কিন সংসদে যার জেরে সারা বিশ্বে মাথা হেঁট হয়ে গেল আমেরিকার।