জেলা রাজ্য

শাসকদলের সন্ত্রাস বামপন্থীদের থামাতে পারে না, প্রমাণ দিয়েছে বীরভূম


রাহুল চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ:২৩শে মে:-একদিকে দুর্নীতিগ্রস্থ তৃণমূলীদের রেশন কেলেঙ্কারি, আর উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে বামপন্থীদের সবটুকু দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা এতেই পায়ের তলার মাটি সরে গেছে শাসকদলের।নানুরের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে চোরা সন্ত্রাস যেমন বামপন্থীদের দমাতে পারেনি, সেইরকমই আজ আরেক জঘন্য নোংরামির ঘটনার জবাব পাটনীল গ্রামের মানুষই একসময় দেবে, বামপন্থীদের লড়াই থেমে থাকবে না।।
লকডাউন সময়কালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এস‌এফ‌আই-ডিওয়াইএফ‌আই এর উদ্যোগে কীর্ণাহার এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ত্রাণ পৌছে দেওয়ার কাজ চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। পাটনীল গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্র-যুবদের উদ্যোগে পরিকল্পনা করা হয়। নারকেল,চিনি,দুধের প্যাকেট, চাল প্রভৃতি বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কাজ চলছিল আজ সকাল ৯ টা থেকে, কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের নেতৃত্বে জনা ১৫ তৃণমূলী বাহিনী প্রথমেই এস‌এফ‌আই বীরভূম জেলা সহ-সম্পাদক মইনুলকে বুকে ধাক্কা মারে, ডিওয়াইএফ‌আই বীরভূম জেলা সম্পাদক মনোতোষ মজুমদার কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং হুমকি দেওয়া হয় ত্রাণ দেওয়ার কাজ বন্ধ করতে বলে। সেইসময় কিরণ, আশাদুল করীমরা গ্রামের লোক সহ প্রতিবাদ করলে তাদের প্রতিও হুমকি আসে, গ্রামের যে সমস্ত মানুষ আমাদের ত্রাণসামগ্রী নেবে, তাদের পঞ্চায়েতের যে কোন ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হবে।
তৃণমূলীদের এই হেনস্থার ফলে শেষ পর্যন্ত তারা পুরোপুরি ত্রাণ দেওয়ার কাজ চালাতে পারেনি এবং ছাত্র-যুব নেতৃত্ব পাটনীল গ্রাম থেকে ফিরে এসে নানুর থানার পুলিশকে এই ঘটনার কথা জানান। ডি.ওয়াই.এফ.আই বীরভূম জেলা সভাপতি অমিতাভ সিং এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করব বলেন “হিসেবের খাতায় লেখা থাকলো। সঠিক সময়ে অঙ্কের উত্তর মিলিয়ে দেবো”।

৭% এর ভোট পাওয়া বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনগুলি লক ডাউনের প্রথম দিন থেকেই দুঃস্থ মানুষের পাশে ১০০% শতাংশ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার মত এ জেলাতেও অনেকেই কাজ হারিয়ে সহায় সম্বলহীন ভাবে দিন যাপন করছেন কোনো রকমে। আজ রামপুরহাট শহরের ১৭ নং ওয়ার্ডের প্রাথমিক স্কুলের কাছে ঐ ওয়ার্ডেরই প্রায় ১৫০ ঘর দুঃস্থ মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করলেন ঐ ওয়ার্ডের সিপিআইএম কর্মীরা। ঐ ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরবোর্ডের কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিক জানান, শহরের বিভিন্ন সহৃদয় মানুষ ও বামপন্থী কর্মীরা এই কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

অন্যদিকে, নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)-এর দুবরাজপুর আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে আজ , দুবরাজপুর আর,বি,এস,ডি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সকাল ৯টা-১১টা পর্যন্ত করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পৌর এলাকার শতাধিক দু:স্থ পরিবারের হাতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ত্রাণ হিসাবে তুলে দেওয়া হলো। “শতবর্ষের আলোকে উদ্ভাসিত সমিতি” সমাজের প্রান্তিক অংশের মানুষের দুর্বিসহ জীবন যন্ত্রনার দিনে সম্মানীয় শিক্ষক,শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের দানে পুষ্ট তহবিলের অর্থ সরাসরি ওই মানুষগুলোর স্বার্থে ব্যয় করতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছে। সমিতির এই কর্মসূচী আগামীদিনেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

এদিকে রামপুরহাট শহরের বিদায়ী পৌরবোর্ডের ১১ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ্কা্উন্সিলর দেবস্মিতা ধীবর এর স্বামী তথা ১১ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি উজ্জ্বল ধীবর এর ফেসবুকে করা একটি পোস্ট নিয়ে রীতিমত চর্চা-কানাঘুষো শুরু হয়েছে শহরে।। ফেসবুক পোস্টটি তিনি করেন 2২১/০৫/২০২০ তারিখে, যেখানে লেখা ছিল, “তৃণমূল দলটাকে শেষ করার ক্ষমতা অন্য কোন দলের নেই, শেষ করার জন্য তৃণমূলই যথেষ্ট”।

কাকতালীয় ভাবে ঐ দিনই রামপুরহাট পৌরসভার প্রশাসকের পদ থেকে নাম বাদ যায় বিদায়ী পৌরবোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের যিনি ছিলেন ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং তার জায়গায় নুতন নোটিশে নাম আছে ৯নং ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর। এ নিয়েও চাপানউতর চলছে এলাকার রাজনীতিতে যদিও বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান জানিয়েছেন যে তিনি দলের সিদ্ধান্তকেই শিরোধার্য মনে করেন।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।