শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

সাপের বিষ সংরক্ষণ গ্রন্থি তৈরি হল গবেষণাগারে।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:৬ই মার্চ:–সাপের বিষ গ্রন্থি তৈরি হল গবেষণাগারে। জানা আছে সাপের বিষ খুব মুল্যবান।।এর থেকে বিভিন্ন রকম ওষুধ তৈরি করা হয়।। গোটা বিশ্বে এর চাহিদা রয়েছে। সাপের শরীর এর মধ্যে বিশেষ গ্রন্থিতে এই বিষ তৈরি হয় এবং তা গ্রন্থি থলিতে জমা হয়।।

সাপ কাউকে কামড়ালে বিষদাতের মাধ্যমে বিষ ঢেলে দেয়।। সাপের উপর নির্ভর না করে এই বিষ যদি গবেষণাগারে তৈরি করা হয় এবং তা এই বিষ তৈরি করার বিষয়ে গবেষকরা বহুদিন ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন।। গবেষকরা জানিয়েছেন সাপ যেরকম গ্রন্থি তে বিষ সঞ্চয় করে সেরকম গ্রন্থি তৈরি করা হয়েছে এবং ওই গ্রন্থি তে তৈরি বিষ আসল সাপের বিষ এর মতো।।

কোস্টারিকা ইউনিভার্সিটির সাপের বিষের গবেষক জোস মারিয়াগুটিরেজ এই বিষগ্রন্থি তৈরিকে যুগান্তকারী বলে বর্ননা করেছেন। তাঁর দাবি সাপের কামড়ে আক্রান্ত ব্যাক্তি দের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন আ্যন্টিভেনাম তৈরির পথ প্রশস্ত করবে।।এর আগে মানুষ ও ইঁদুর এর স্টেম সেল থেকে বেশ কয়েকবছর আগে ছোট গ্রন্থি তৈরি করেছেন।। তা দিয়ে গোটা শরীরের বিভিন্ন অংশের টিস্যু তৈরি করা গেছে।। এই প্রথম কোনো সরীসৃপের গ্রন্থি তৈরি করতে সফলতা অর্জন করলেন গবেষকরা।।

নেদারল্যান্ডের উরিচট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই গ্রন্থি তৈরি করেছেন এবং তাদের তৈরি গবেষণাপত্র ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।।এই গবেষকদের অন্যতম সদস্য হানসক্লিভার জানান প্রতি বছর সাপের কামড়ে সারা বিশ্বে ১ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারান।। ঊনবিংশ শতাব্দী তে যে পদ্ধতিতে আ্যন্টিভেনাম তৈরির কাজ হতো এখনো তার কোনো পরিবর্তন হয়নি।। অথচ সাপে কাটা রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য উন্নত পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত।।প্রতিটি সাপের বিষ এ গঠন গত পার্থক্য রয়েছে।। সেই কারণে আ্যন্টিভেনাম তৈরির ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় যাতে আহত ব্যক্তির মস্তিষ্ক ও রক্তের জমাট বেঁধে যাওয়া রুখতে পারে।এই ভাবনা থেকেই গবেষকরা প্রথম সরিসৃপের স্টেম সেল নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।।

গবেষকদের প্রথম সারির গবেষক হান্স ক্লিভার বলেন মানুষ এর স্টেম সেল নিয়ে জানা থাকলেও সাপের স্টেম সেল সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না।। ক্লিয়ার এবং তাঁর অন্যান্য গবেষকরা কেম কোরাল কোবরা, ডায়মন্ড ব্ল্যাক সহ নটি প্রজাতির সাপের বিষ গ্রন্থি থেকে স্টেমসেল বের করেন এবং তাতে বিভিন্ন হরমোন ও প্রোটিন এর সংমিশ্রন ঘটান এবং তাঁরা দেখেন এই পদ্ধতিতে যেভাবে মানুষ বা ইঁদুরের স্টেম সেল বৃদ্ধি পেয়েছিল ঠিক সেভাবেই গবেষনা গায়ে এই স্টেম সেলের বৃদ্ধি ঘটছে।।এক সপ্তাহ ধরে হরমোন ও প্রোটিন মিশ্রণে ডুবে থাকা ওই স্টেম সেলের বা কোষের আধ মিলিমিটার বৃদ্ধি ঘটে।।খালি চোখে তা দেখা যায় না।।এরপর যখন কোন বৃদ্ধির সহায়ক হরমোন যখন সাপের স্টেম সেল থেকে আলাদা করে দেওয়া হয় তখন দেখা যায় সেটি এমন একটি কোষ তৈরি হয়েছে যার থেকে বিষ তৈরি হচ্ছে।।আর এটি আসলে সাপের গ্রন্থি থেকে তৈরি হওয়া বিষ থেকে গুনমানে কোন অংশে কম নয়।। গবেষণাগারে তৈরি করা বিষ যে আসল বিষের মতো সমান ভয়ঙ্কর তা প্রমাণ করতে একটি ইঁদুর এর উপর প্রয়োগ করা হয়।। দেখা যায় আসল সাপের বিষে যেমন ক্ষতি হয় ঠিক তেমনি ইঁদুর টির পেশিকোষ ও মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।