রঘুনাথ ভট্টাচার্য্য:চিন্তন নিউজ:১০ই ফেব্রুয়ারি:-শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত সাধারণ্যে দেশব্যাপী নতুন আলোড়ন তুলেছে। খবরে প্রকাশ, আদালতের বিচারে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ এবং পদোন্নতিতে তফসিলি জাতি ও আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষণ করার বিষয়ে রাজ্যসরকারকে নির্দেশ দিতে পারেনা আদালত। কারন হিসাবে না কি বলা হয়েছে যে, এই সংরক্ষণ মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না।
এই প্রসঙ্গে , উত্তরাখণ্ড সরকারকে যে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট, তা নাকচ করেছে শীর্ষ আদালত।নানা মহলে নানা প্রশ্ন নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বাম রাজনৈতিক দল গুলি, বিশেষতঃ সিপিআই (এম)এব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশ করে জানিয়েছে বলে খবর। তাদের মতে , আদালত সংবিধানের ১৬(৪) ও ১৬(৪-ক)ধারা দুটির অবস্থান ‘সক্ষমতামুলক’ বলে
ব্যাখ্যা করে যে শীর্ষ আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই সংরক্ষণের দাবি মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না, অর্থাৎ, উল্লিখিত সংরক্ষণ করা হবে কিনা তা নির্ধারণ করার পূর্ণ অধিকার আছে রাজ্যসরকারগুলির, এব্যাপারে তাদের দ্বিমত আছে।
সিপিআইএম পলিটব্যুরোর মতে উল্লিখিত সংরক্ষণ মৌলিক অধিকারের মধ্যে না পড়লেও ‘বাধ্যতামুলক’ সাংবিধানিক ধারাগুলির অন্যতম। ভারতের সর্বত্র তার প্রয়োগ ‘বাধ্যতামুলক’ । তাদের মতে , সংবিধানের এহেন ব্যাখ্যা দলিত- বিরোধী,আদিবাসী-বিরোধী, ওবিসি-বিরোধী।সংবিধানের নির্দেশাবলীর মধ্যে এ রকম ফাঁক থাকলে তা সংশোধন করে আইনী প্রস্তাব আনতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
ঘটণার বিবরনে জানা যায় যে,২০১২ সালে উত্তরাখণ্ড সরকার পূর্ত দপ্তরের পদ পূরণ করে দিয়েছিল সংরক্ষণ
ছাড়াই।মামলা হলে হাইকোর্ট রাজ্যসরকারকে সংরক্ষণ বলবৎ রাখার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ বাতিল করেছে শীর্ষ আদালত। তারা বলেছেন, রাজ্যসরকার এব্যাপারে বাধ্য নয়। বিশদ ব্যাখ্যা হল, ১৬(৪)ও১৬(৪-ক) ধারায় এই সংরক্ষণ দাবি করার অধিকার কোনো ব্যক্তিকে দেওয়া হয় নি। এ ব্যাপারে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব ক্ষমতাই সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের। অবশ্য,সেই ঈপ্সিত সংরক্ষণ কার্যকরী করার আগে, রাজ্য সরকারকে নির্দিষ্ট ও বিস্তৃত তথ্য সংগ্রহ ও নথিভুক্ত করতেহবে বাধ্যতামূলকভাবে, যাতে একথা প্রমাণিত হয় যে, ঐ পদে বা পদগুলিতে তফসিলি জাতি ও আদিবাসীদের যথেষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধিত্ব নেই। পদোন্নতির ক্ষেত্রে যদি মামলা হয় তবে আদালতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণাদি সহ নিশ্চিত করতে হবে যে ঐ সংরক্ষণ অপরিহার্য ছিল এবং ঐ সংরক্ষণের ফলে প্রশাসনের দক্ষতার কোনো ঘাটতি হবে না।
আদালত বলেছেন, এতদ্সত্ত্বেও রাজ্যসরকাররের ‘ মনে করা’র উপরেই এই সংরক্ষণ নির্ভরশীল। অবশ্য, রাজ্যসরকার জনমত তৈরি করতে চাইলে সে ব্যাপারে তথ্যসমৃদ্ধ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেই পারে। শীর্ষ আদালতের ঐ রায়ের সম্বন্ধে সমালোচনা করে কংগ্রেস বলেছে, এই সংরক্ষণের অধিকার তফসিলি জাতি ও আদিবাসীদের মুল অধিকার এবং তা কখনোই রাজ্যসরকারের ‘ মর্জিনির্ভর’ হতে পারে না। তাদের মতে
বিজেপি সরকারের আমলে তফসিলি জাতি ও আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত নয়। তারা সংসদে এর প্রতিকার দাবি করবে।