সূপর্ণা রায়:-চিন্তন নিউজ:-২১শে সেপ্টেম্বর:-
প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে ভারতবর্ষ করোনা সংক্রমণে বিশ্বের শীর্ষ স্থানে রয়েছে।দেশজুড়ে সংক্রমণ বাড়ছে অথচ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন দাবি করছেন ভারতের কয়েকটি মাত্র রাজ্যেই বেশী সংক্রমণ হচ্ছে বাকি রাজ্যের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে। করোনা সংক্রমণের জেরে এখন প্রতিটি রাজনৈতিক দল ভার্চুয়াল মিটিং করতে বাধ্য হচ্ছে। রবিবার এমনই এক প্রচার সভায় ডঃ হর্ষবর্ধনকে ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে প্রশ্নটি এড়িয়ে গেছেন। তিনি বলেন যে কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণ বাড়ছে তাই এমন সংক্রমনের রিপোর্ট আসছে।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন যিনি মাত্র কিছুদিন আগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন তিনি পরিষ্কার করে বলেন ভারতবর্ষে যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে এটা কেন্দ্রীয় সরকারের মেনে নেওয়া উচিত। সকলেই অবগত আছেন যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত সংখ্যা ৯০ হাজার এর বেশি। শুধু মাত্র চলতি মাসেই ভারতে প্রায় ১৬ লাখ ৮৬ হাজার জন মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।যেখানে জুলাই মাসে করোনার পজিটিভিটি রেট ছিল ৭’৫ শতাংশ, সেপ্টেম্বর এর মাঝামাঝি সময়ে এটাই বেড়ে হয়েছে ১০’৫৮ শতাংশ। সংক্রমনের বাড়বাড়ন্ত দেখে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন ভারতে এখন করোনা দ্বিতীয় ওয়েভ চলছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশের ১৭ টি জেলাতে লাল সতর্কতা জারি করেছে আর মুখে বলছে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
গত শুক্রবার ডঃ হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন করোনা প্রতিশোধক ভ্যাকসিন তাঁদের হাতে চলে এলে তা কিভাবে বন্টন হবে তা নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হবে এবং তাঁরাই সব ঠিক করবেন।যখন করোনা সংক্রমণের এমন হাল তখন আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আইসিইউ এর বেড পেতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে, যা এই রোগের ক্রিটিক্যাল পেশেন্টদের বাঁচানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনা পরিস্থিতিকে কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন তবে গত মাসের তুলনায় এইমাসে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। যখন পরিস্থিতি আয়ত্বের মধ্যে নেই তখন আরও এক রিপোর্টে জানা গেছে যে আনলক পর্বে অনেক আক্রান্ত সুস্থ হয়ে কাজ কর্মে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর আশঙ্কা নেই বললেই চলে কিন্তু তাঁদের থেকে যদি বয়স্কব্যক্তিরা আক্রান্ত হন তবে তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। আরও এক উদ্বেগ এর মুখোমুখি ভারতবাসী।যেসব রোগীর আইসিইউ পরিষেবা প্রয়োজন তার মধ্যে মাত্র ৪% পাচ্ছেন নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আর বাকিদের জোগাড় করতে হচ্ছে নিজের থেকে। মহাসমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের পরিবারের সদস্যদের আইসিইউ বেড পেতে তা সরকারি বা বেসরকারি হসপিটাল যাই হোক না কেন।
এই নিয়ে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের আইসিইউ বেড পেতে নিজেদের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগাতে হচ্ছে। এর থেকেই বোঝা যায় যে ভারতবর্ষের চিকিৎসার পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির উপায় সরকারকে বার করতেই হবে নাহ’লে মানুষের সমূহ বিপদের সম্ভাবনা।