দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

ছাত্রবিরোধী পদক্ষেপ কার্যকরী করতে ক্যাম্পাসে আধাসেনা মোতায়েন জেএন‌ইউ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের।


চৈতালী নন্দী: চিন্তন নিউজ:১২ই নভেম্বর:আবেগ আর যুক্তির পরিবর্তে ক্ষমতা প্রয়োগেই বেশী আস্থা জেএনইউ কর্তৃপক্ষের।। ছাত্রবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকদিন ধরে অসন্তোষ চলছিলো দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। বামপন্থী ছাত্র ইউনিয়নকে কোনোভাবেই কব্জা করতে না পেরে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ জোর করে ছাত্রদের উপর অন‍্যায‍্য নিয়ম চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করে। তার মধ‍্যে রয়েছে হোস্টেলের ফি তিনগুণ বাড়ানো, লাইব্রেরী ব‍্যবহারের সময় পরিবর্তনসহ পড়ুয়াদের পোষাক বিধিতে বাধ‍্যতামূলক বদল । এই সকল কারনে কয়েকদিনের অসন্তোষ চরমে পৌছয় গতকাল সমাবর্তনের দিন।

কিছু দিন পূর্বেই এই দাবী গুলি বিবেচনা করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের আশ্বাস কার্যত মিথ্যা প্রমাণিত হয়। শিক্ষার পীঠস্থানকে বানিজিকীকরনের নেশায় ক্ষমতার দম্ভে বলীয়ান কেন্দ্রীয় সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের মাধ‍্যমে ছাত্রদের উপর চাপিয়ে দেয় কয়েকটি অযৌক্তিক ছাত্রবিরোধী নীতি।

এদিন সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল সহ আরও অনেক বিশিষ্ঠ ব‍্যাক্তি। এই সমাবর্তন হচ্ছিল এআইসিটিই চত্বরে।ছাত্রছাত্রীরা যাতে এই চত্বরে কোনোভাবেই ঢুকতে না পারে সেজন‍্য মোতায়েন করা হয় আধাসেনা ও হাজারে হাজারে পুলিশ।গড়া হয় ব‍্যারিকেড।ছাত্রদের জমায়েত বাড়তে থাকে,অবশেষে ব‍্যারিকেড ভেঙে এগোতে থাকে ছাত্রদের মিছিল। সংঘর্ষ বাধে ছাত্রদের সঙ্গে,এদের ছত্রভঙ্গ করতে ছোঁড়া হয় জলকামান, শুরু হয় পুলিশের লাঠিচার্জ।বহু ছাত্র আহত হয়। কিন্তু কোনো বাধাই ছাত্রদের প্রতিহত করতে পারেনি।স্লোগান ওঠে ,গো ব‍্যাক দিল্লী পুলিশ। ছাত্রদের রুদ্রমূর্তি দেখে উপাচার্য ভয়ে পলায়ন করেন।পড়ুয়ারা এর আগে বার বার ভিসির সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তিনি দেখা করেননি। ছাত্রদের কথামতো আগে যে হোস্টেল খরচ ছিল আড়াই হাজার টাকা এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার টাকায়।

বাম ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ঐশী ঘোষের মতে তারা যে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়ে আসতে পেরেছেন সেটা তাদের জয়। এই কালা নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হলে কোনও সাধারণ বাড়ির ছেলেমেয়েদের জন‍্যে এখানের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত জেএনইউ ছাত্র সংসদের উপর অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা,এদের দমিয়ে রাখাই ছিল এদের মুল লক্ষ‍্য।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বুঝতে ভুল হয়েছিল দমনপীড়ন চালিয়ে ছাত্র আন্দোলন স্তব্ধ করা যায়না।তাদের মনোভাব ,অসন্তোষের কারন তাদের দাবীসমূহ ধৈর্যধরে শুনে ব‍্যাবস্থা নিতে হয়।তবেই তাদের জয় করা সম্ভব।ক‍্যাম্পাসে আধাসেনার দায় শুধুমাত্র জেএনইউ কর্তৃপক্ষের নয় ,সরকারকেও এর দায় নিতে হবে। যুক্তি বুদ্ধি ব‍্যাবহার না করে তাঁরা বলপ্রয়োগেই বেশী আস্থা রেখেছেন।যা অত‍্যন্ত দূর্ভাগ‍্যজনক।এসএফআই এর তীব্র নিন্দা করেছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।