দেশ

করোনা সংকটে – প্রধানমন্ত্রীর হাস্যকর আবেদন, ঘন্টা,শঙ্খের পর প্রদীপ প্রজ্জ্বলন,


রাহুল চ্যাটার্জি :চিন্তন নিউজ:৩রা এপ্রিল:– একদিকে দেশকে ব্যাধি মুক্ত করতে লড়াই জারি পুলিশ- স্বাস্থ্যকর্মী- ডাক্তার- নার্স- যুব সমাজকর্মীদের, যাঁরা জীবন বাজি রেখে মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর, অন্যদিকে চলছে ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে “মন কি বাত” শুনিয়ে হুজুগ তোলানো রাজনীতি।।

কখনও থালা-ঘন্টা-কাঁসর বাজানোর নিদান আবার সবে পাওয়া বার্তা অনুযায়ী প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালিয়ে করোনা মোকাবিলার মেকি বার্তা। সকাল হতেই অনেকেই অধীর আগ্রহে বসেছিলেন বোকা বাক্সের সামনে।। কিন্তু কি পেলেন সকলে?? যা শুনলেন তাঁরা, তা অবৈজ্ঞানিকভাবে মানুষের আবেগকে মাড়িয়ে আরো একবার বিপথে চালনা করে মৃত্যুর দিকে এক কদম ঠেলে দেওয়া ছাড়া আর কি?? (প্রথম রবিবারের ঘটনাটি মনে মনে রোমন্থন করে নিন)।। লাইভ ভিডিও পরবর্তী সময়ে নিন্দুকেরা এখন মজা করছেন, “ছোট বেলা ভাবতাম লোকের বাড়ির জানলা দিয়ে ঘরের ভেতর টর্চ মারবো, এখন সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে আগামী রবিবার”।। কেউ কেউ মজা করে জানতে চাইছেন, “প্রদীপ বা মোমবাতি নেই, ফোনের আলো টাও খারাপ হয়ে গেছে, তবে কি টুনি জ্বালানো যাবে??”

সমকালীন করোনা ভাইরাস,মাইক্রোবস (Microbes) এর কারণে জীবন বিপর্যস্ত – জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন । স্প্যানিশ ফ্লু (Spanish flue) এর ভয়াবহ রূপ দেখেছি আমরা । উপন্যাসের পাতায় মহামারী সম্পর্কেও পড়েছি- এখন প্রত্যক্ষ করছি । তুলনা করার সময় এখন আসেনি। নাটকে যেমন এ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স (anti climax) থাকে তেমনি সভ্যতার ইতিহাসে এগুলিও বোধহয় সেরকমই। তাই থমকে গেছে সময়, যদিও তা সাময়িক । ভরসা রাখতে হয় রবি ঠাকুরের কথায় -মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়/ আড়ালে তার সূর্য হাসে।।এই লাইন দুটিকেই পাথেয় করে এস‌এফ‌আই বিশ্বভারতী ও বোলপুরের লোকালের কমরেডরা তাই আজও রাস্তায়। বহু মানুষ অনাহারে। ভাতের হাঁড়ি চাপছে না দিনের পর দিন। তবে আজও ঐ ছোট ছোট কুঁড়ি গুলো সাধ্যমত চেষ্টা করল কিছুটা মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

গতকাল হেল্পলাইন এ দেওয়া নম্বরে ফোন আসে তাদের কাছে বোলপুরের পার্শ্ববর্তী এক গ্রামে এক মা তার ছেলে কে নিয়ে অভাবের সংসার কোনরকমে টেনে নিয়ে চলেছেন।। মা চলতে পারেন না, দাঁড়াতেও পারেন না- ছেলেটিও মানসিক বিকারগ্রস্ত।। বাড়িতে খাবার বলতে এই গোটা মাস চালানোর সেরকম কিছুই নেই। যিনি খবর দেন তাঁকে সঙ্গে নিয়েই আজ কিছু চাল, ডাল ও সবজি তার ঘরে পৌঁছে দিয়ে আসে অনঘ, অঞ্জন, বদরুল রা, যারা ভুখা পেটে থাকার তীব্র যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে, এগিয়ে এসেছে।।

বিশ্বভারতীর ছাত্র অনঘ বলে, “অভাবের ঘরে যার যা প্রয়োজন আমাদের জানান। আবারও বলছি চেষ্টা করবো নিজেদের সবটা দিয়ে পাশে থাকার।”


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।