রাজ্য

ধ্বংসের নাম আম্ফান


তরুণ মালী: চিন্তন নিউজ;২১শে মে:– দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বিস্তর এলাকা ও সুন্দরবন এলাকা পুরোপুরি বিপর্যস্ত আম্ফানের প্রভাবে। কত প্রাণ, কত বাড়ির ছাদ,চাল, চলে গেছে এই ঝড়ের জেরে তা সহজে বর্ণনা দেওয়া যায় না। জেটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন সাগরদ্বীপ জানা গিয়েছে, কচুবেড়িয়ায় একটি জেটি ভেঙে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সাগরদ্বীপ। এছাড়াও ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নামখানা, গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, ভাঙরে ঘরবাড়ি নষ্টের পাশাপাশি , আনাজ নষ্ট হয়েছে প্রচুর। এদিকে, আম্ফানের দাপটে হাও়ডার একটি স্কুলের ছাদ উড়ে যায়। যদিও হতাহতের খবর আসেনি। অন্যদিকে, গাছ পড়ে কার্যত সমস্ত সংযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছে দিঘার। সুন্দরবনে ক্যাম্প অফিসে জল ঢোকায় আতঙ্ক বাড়ে মানুষের মধ্যে।
আম্ফানে বাংলার বহু এলাকায় জল,বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন!১০-১২ জনের মৃত্যু, আরও যা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

সুন্দরবনে শুধু হলুদের ওপর সাদা ডোরাকাটা দাগ নিয়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বসবাস করে না। সুন্দরবনের মাঝে অসংখ্য জনজাতির বসবাস। কেউ মধু সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। কেউ মাতলা নদীর মাছ বিক্রি করে সংসার চালায়। কেউ রাত্রি হলে বেড়িয়ে পড়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে মাঝ সমুদ্রে। এইভাবে জীবনে প্রতিনিয়ত যুদ্ধে বাজি রেখে বেঁচে থাকে সুন্দরবন এলাকার শ্রমজীবী মানুষ।

সেদিনও আইলা ম্যানমেড ছিল না। আজও আম্ফান নয়। কিন্তু আজকের ভয়ানক ঘুর্নিঝড় আম্ফান-এর প্রকোপের জন্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোনো অংশে আইলার থেকে কম নয়। বরং এই মহামারী সংকটময় মুহূর্তে এই ঘুর্নিঝড় ঝড় মরার ওপর খাঁড়ার সমতুল্য।

আইলার সময় সরকারের ছিল বামফ্রন্ট সরকার। সেদিনও সরকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকার তৎকালীন বিরোধী দলের পরামর্শে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। অথচ রাজনৈতিক চক্রান্ত করে সেদিন উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে সরকারের কাছে বাঁধা দিয়েছিল।

ঘটনাচক্রে আজ আম্ফান-এর জন্য জনজীবন বিপন্ন। সরকারে অবস্থান করে আছে ঐ সময়ের বিরোধী দল। যা আজ শাসক দল হিসেবে পরিচিত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটাই সত্যি সেদিনের সুন্দরবন উন্নয়ন পরিষদ মন্ত্রী আজ তিনি প্রাক্তন। কিন্তু কান্তি গাঙ্গুলি আজও সমানভাবে সরকারকে চিঠি দিয়ে বার্তা দিয়েছেন তিনি সুন্দরবন এলাকার মানুষের পাশে আছেন। যথাসাধ্য ত্রাণ অসহায় মানুষের পাশে আছেন। সহযোগিতা করুন।

সেদিনের ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি( মার্কসবাদী) আজও এক‌ই দাবি করে চলেছে এই বিপর্যয়কে মানুষের স্বার্থে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করতে হবে।

কিন্তু আজকের পশ্চিমবঙ্গে মোট ১৮টি বি জে পি সাংসদরা কিন্তু নীরব। কোনো দাবি নিয়ে সোচ্চার নেই। মানুষের বিপদের দিনে এরা সত্যিই বড্ড অসহায়।

এলাকার মানুষ বলছেন, কান্তি গাঙ্গুলি হ’লেন আমাদের আসল রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তাঁর আদর্শ এই কঠিন সংকটময় সময়ে রাজনৈতিক রঙ না দেখে মানুষের পাশে থাকা। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন। এরজন্য তাঁর ভোটবাক্সের ব্যালট গোনার প্রয়োজন পড়ে না।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।