শাশ্বতী ঘোষাল, চিন্তন নিউজ, ১৩ ই মার্চ:- কেনিয়ার অভয়ারণ্যে চোরাশিকারীদের হাতে খুন পৃথিবীর শেষ মহিলা সাদা জিরাফ। শেষ হলো বংশবিস্তারের আশা।।
“বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে ” কথাটি বহুকথিত, বহু প্রচলিত হলেও মানুষ কিন্তু ক্ষমতার উন্মত্ত মোহে সংকীর্ণ স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যে বারবার অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রজাতির প্রতি নৃশংস ও ভয়ংকর অত্যাচারী হয়ে উঠেছে। বন্য প্রাণীদের যথার্থ সৌন্দর্য বিকাশের ক্ষেত্র হচ্ছে বন্য পরিবেশ। সেখানেই তাদের পরিপূর্ণতা। অথচ কিছু কাণ্ডজ্ঞান হীন মানুষের নিষ্ঠুর জিঘাংসাবৃত্তির কারণে আজ বন্যপ্রাণীরা নিজভূমে ও নিরাপদ নয়। বন্যপ্রাণীর স্বাধীন স্বচ্ছন্দ বিহারের রম্যক্ষেত্র অরণ্যের অধিকারটুকু ও তারা ভোগ করতে পারে না। স্বার্থান্বেষী মানুষের প্রতিনিয়ত নির্বিচারে বন্য প্রাণী নিধনের গুপ্ত প্রয়াসে তাদের স্বাধীন বিচরণের ন্যূনতম অধিকারটি তারা হারাচ্ছে।
ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে উত্তর কেনিয়ায় গিয়ে সাদা জিরাফ দেখা একটা অন্যতম স্বপ্ন। কিন্তু যাদের এখনো সে স্বপ্ন পূরণ হয় নি তাদের আর তা পূরণ হওয়ার কোনো আশা নেই । পাচারকারীরা হত্যা করেছে বিশ্বের একমাত্র সাদা জিরাফটিকে। তার শিশু সন্তানটিকে ও তারা রেহাই দেয় নি।
সম্প্রতি কেনিয়ায় একমাত্র মহিলা সাদা জিরাফ ও তার শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে বন সংরক্ষণকারীরা। জানা গেছে উত্তর কেনিয়ার গারিসার ইসাকবিনি হিরোলা কমিউনিটি কনসারভেনসি থেকে পাচারকারীদের অস্ত্রের আঘাতে নিহত ঐ দুটি জিরাফের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ।তাদের মধ্যে একটি সাদা জিরাফ। এখনো পর্যন্ত সাদা পুরুষ জিরাফটি জীবিত আছে। সাদা জিরাফ অত্যন্ত বিরল ও দুর্লভ। ২০১৭ সালে কেনিয়ায় প্রথম সাদা জিরাফের খোঁজ পাওয়া যায়। সংরক্ষণকারীদের কড়া নজরে তারা বেশ আনন্দেই দিন কাটাচ্ছিল। গত বছর অগস্টে সন্তানের জন্ম দেয় ঐ সাদা মহিলা জিরাফটি।
জিরাফটির মৃত্যুর খবর বনরক্ষী ও কমিউনিটির কাছে পোঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। পৃথিবীর এই লুপ্তপ্রায় প্রাণীগুলি দিনে দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে । নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে তাদের শুধুমাত্র সংকীর্ণ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই বিরল প্রজাতির বন্য প্রাণীগুলি শুধু ছবির পাতায় দৃশ্যমান হবে। চাক্ষুষ করার কোনো উপায় আর রইলো না। পৃথিবী থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল সাদা জিরাফের প্রজাতি।