দেশ

আই এম এফের মোদী সরকারকে সমর্থন আন্দোলনকারীদের আরো জোটবদ্ধ করলো।


কল্পনা গুপ্ত: চিন্তন নিউজ:১৬ই জানুয়ারি:- কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী কৃষি আইনের বিরোধিতায় কৃষক আন্দোলনের রেশ দেশের বাইরেও ছড়িয়েছে। টানা ৫১ দিন ধরে চলা কৃষক আন্দোলনকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শান্তিপূর্ণ ভাবে চলতে পারে বলে এক কমিটি গঠন করেছে যা কৃষকদের সমস্যাগুলি দেখবে। যদিও কমিটির চারজন সদস্যই কৃষি আইনের পক্ষে। এরই মধ্যে আই এম এফ ( ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড) ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে নয়া কৃষি আইনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। আই এম এফের ডিরেক্টর অব কমিউনিকেশন গ্যারি রাইস বলেন, এই আইনের দ্বারা ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটবে। কিন্তু একটা আশঙ্কাও প্রকাশ করে বলেছেন, এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে। প্রশ্ন ওঠে, বিকাশই যদি হবে তো সেই কৃষকদেরই ক্ষতির আশঙ্কা আসে কিভাবে?

আই এম এফ খুব চড়া হারে ঋণদানকারী সংস্থা। সেই সংস্থা যে এই আইনকে সমর্থন করবে সেটাই প্রত্যাশিত। নতুন এই আইনে সরকার কৃষকদের সমস্ত স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেবার ব্যবস্থা করেছে। চাষি তার নিজের জমিতে কি চাষ করবে, কতটা করবে, বীজ তৈরি করবে, চাষের উৎপাদিত ফসলের দাম নির্ধারণের সমবেত পদ্ধতি নিজেরাই ঠিক করা ইত্যাদি সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে দেওয়া হলো আদানি- আম্বানির মতো কর্পোরেটদের হাতে। অর্থাৎ চাষি নিজের জমিতে নিজে মজুর হয়ে যাবে। কারণ তাদের নীলচাষের মতন দাদন দেওয়া হবে। এরপর উৎপাদিত ফসল বেচতে হবে ওদের কাছে একেবারে ন্যুনতম মূল্যে, আর আম্বানিরা তা বাজারে বেচবে ৫ গুন বেশি দামে। বাহ! কৃষক সুরক্ষিত! গ্রামীণ অর্থনীতি বিকশিত! সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই আইন! বাণিজ্যিক ফসলের চাষ চাই, চাই আম্বানিদের আরো আরো পুঁজি। চাষি আরো দরিদ্র হবে, দেশের জনগন চড়া দামে কৃষিজাত পণ্য কিনবে। কর্পোরেটের লাভই আই এমের লাভ। আর ভোটের রাজনীতিতে টিকে থাকার লোভে মোদী সরকারকেও তো ওদের সুবিধা পাইয়ে দিতে হবে, তাই না।

যাঁরা আন্দোলনকারী, বামপন্থীরা যাঁরা অন্দোলনে সামিল, প্রতিবাদে নিয়ত রত, তাঁরা এই সমর্থনকে কোন মূল্যই দেন না। আই এম‌ এফের সমর্থন মোদী সরকারের মুখোশটা টেনে খুলে দেওয়াতে আন্দোলন নৈতিক সমর্থনে আরো পুষ্ট হলো বলে তাঁরা মনে করেন। অপোষহীন আন্দোলনকারী কৃষকদের প্রতি যারা দেশকে ভালোবাসেন তাদের অফুরন্ত সমর্থন নিশ্চই জয়ের আশায় পাশে থাকবেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।