সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:২৯শে এপ্রিল:-আজ রাজ্য সরকার এক বিশাল প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে । এর আগে প্রতিটি রাজনৈতিক সভাতে মুখ্যমন্ত্রী বলে এসেছেন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির কথা। তাঁর ভাষণের সময় হয়তো ভাবতেও পারেননি রাজ্য এমন একটি ভয়ানক ভাইরাসের মুখোমুখি হবে গোটা দেশ ও বিশ্বের সাথে।। আজ তাঁর ভাষণের সারবত্তা কিছুই ছিল না তা আজ জলের মতো স্বচ্ছ। যদি তাঁর কথাতে সত্যতা কিছুমাত্র থাকতো তবে এই দূর্দিনে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার জন্য সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরতে হতো না।।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালের কথা সেখানে জায়গা নেই তাই যাও বেসরকারি হাসপাতালে আর সরকারি হাসপাতালের কথা কোন রোগী ভর্তি হতে গেলে সামান্যতম চিকিৎসা না করেই বলা হচ্ছে আগে লিখিত প্রমাণ আনতে যে তার করোনা হয়নি। একটা অসুস্থ মানুষ যাবে তো কোথায় যাবে??? কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কেন আর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন??? মানুষের অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগও তো আছে।। সেই সমস্ত রোগের চিকিৎসা করতে এইসব মানুষদের জন্য কি চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা পরিষ্কার করে জানানো হচ্ছে না।। কোথায় কোন রোগী গেলে তাঁকে এলাকার ছোট বড় সব নার্সিং হোম থেকে বলা হচ্ছে হয় সেখানে চিকিৎসা হচ্ছে না বা অন্য কোন উপায় এ অন্য নার্সিংহোমে যেতে বলা হচ্ছে।। আবার অনেক হাসপাতালে বলা হচ্ছে এখানে ডাক্তার নেই __তারা যেন অন্য কোথাও যান।। এভাবে গত কয়েকদিন ধরে সাধারণ মানুষ সামান্য চিকিৎসা না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।। ক্যান্সার, কিডনি,লিভার বা হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা যে রোগী চিকিৎসা জন্য গেলেও সটান মুখের উপর হাসপাতালে এর দরজা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।।
এদিকে মূখ্য সচিব জানান যে সরকার থেকে বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধের কোনো নির্দেশিকা জারি হয়নি । কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাসপাতাল গুলো বন্ধ রাখছে।। আর বেসরকারি হাসপাতালের বক্তব্য প্রতিদিন নানারকম রোগের পরিষেবা পেতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোগীদের আনাগোনা এবং তাঁদের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে।। এখন তাঁদের মধ্যে কারো যদি করোনা সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে গোটা নার্সিংহোম বা হসপিটাল গুলো সংক্রামিত হবে।। তাই সরকারকেই সমস্ত রকম সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে, না হলে আরও বড় বিপদের সম্মুখীন হতে হবে রাজ্যকে।।
এই পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধ সবজী বিক্রেতার।। ঠাকুরপুকুরে বসবাসকারী এক সবজী বিক্রেতা হঠাৎ করে বুকের ব্যাথাতে আক্রান্ত হন ।। অত্যন্ত দরিদ্র এই বৃদ্ধের পরিবার পয়সা না থাকা স্বত্বেও এক স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে যান।। কিন্তু ওই নার্সিং হোম থেকে সটান জানানো হয় সরকার থেকে বা অন্য কোন ডাক্তার বাবুর কাছ থেকে লিখিয়ে আনতে যে ওই রোগীর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হয়নি।। এসমস্ত ডামাডোলের মধ্যে বৃদ্ধ বাড়াবাড়ি রকমের অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয়।। এই রকম ভূরিভূরি অমানবিক ঘটনা ঘটে চলেছে পশ্চিমবাংলাতে।।