দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

এবার বেসরকারিকরণ মিড ডে মিল প্রকল্প!


চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:১৩ইঅক্টোবর:–আবার সরকারি প্রকল্পের বেসরকারিকরন : এবার স্কুলের মিড ডে মিলের ব‍্যাবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় রন্ধনশালা।বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত সরকারি প্রকল্পের বেসরকারীকরনের নীতি নিয়ে চলছে।একে একে বেসরকারি হাতে যাচ্ছে রেল,বিএসএনএল, এমটিসিএল সহ একগুচ্ছ সংস্থা।এবারে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন সংযোজন মিড ডে মিল।অন‍্য সংস্থা গুলো বেসরকারীকরনের সঙ্গে মিড ডে মিলের বেসরকারি করনের একটা মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের জাতির ভবিষ্যত।মিড ডে মিলের খাবার খায় ছোট ছোট স্কুলের বাচ্চারা।অতএব ঐ শিশুদের খাবার নিয়ে কোনো ভাবেই আপোষ করা যায় না।ঐ খাবার খেয়ে যদি কোনো ভাবে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরকার কেই নিতে হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক গত সপ্তাহে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে।কার্যত ২০১৭ সালের মে মাসেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে যায়। মিড ডে মিল প্রকল্পের অধীনে স্কুল পড়ুয়াদের জন‍্যে খাবার তৈরি করবে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত কেন্দ্রীয় রন্ধনশালা গুলি।এই রন্ধনশালা গুলি পরিচালিত হবে বেসরকারি সংস্থা দ্বারা।বেসরকারি পরিচালনায় রন্ধনশালা গুলি নিয়েই অভিভাবকদের মনে দানা বাঁধছে ক্ষোভ।কারন এই রন্ধনশালা গুলো আস্তে আস্তে পুরোপুরি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে।
মোদী-শাহ বাহিনীর এই অন‍্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সারা ভারত অঙ্গনওয়ারি ফেডারেশনের নেত্রী এ আর সিন্ধু।তিনি বলেন এই সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে ,যা ভবিষ্যতে অনেক বড় আকার নেবে।’অক্ষয় পাত্র’- মতো সংস্থা গুলো শিশুখাদ্য কে সামনে রেখে সরকারি মদতে মুনাফা করে ব‍্যাপক অর্থ লুটছে।এর থেকে মুনাফা করছে সরকারও।


স্কুলের মিড ডে মিলের অধীনে খাবার প্রস্তুতপর্বে যে কর্মযজ্ঞ চলে তাতে কাজ করেন ২৫ লক্ষেরও বেশী মানুষ।কেন্দ্রীয় রন্ধনশালা তৈরী হলে কাজ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে তাদের।এই সব কর্মীদের কেন্দ্র ১০০০টাকা সান্মানিক দিয়ে থাকে ।বাকি রাজ‍্য সরকার বরাদ্দ মতো দিয়ে থাকে।এইসকল কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া ভাতা সহ বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন।কিন্তু সরকার সেই সব না মেনে উল্টো চাপ দেবার চেষ্টা করছে।
নিজেদের স্কুলে রান্না হলে তার অনেক সুবিধা রয়েছে।তার মান শিক্ষকরা ও অভিভাবকরা যাচাই করতে পারেন।কেন্দ্রীয় রন্ধনশালা থেকে খাবার নিলে তার মান যেমন যাচাই করা যাবেনা তেমনি সেই খাবার স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া ও অনেক খরচসাপেক্ষ।এছাড়া গ্রামীণ স্কুল গুলি তে দূরত্ব বেশী হবার দরুন গরমকালে খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।এছাড়াও এর ফলে কাজ হারাবেন সেই সব স্থানীয় কর্মীরাও।

পশ্চিমবঙ্গ ,বিহার ,ওড়িশা ঝাড়খন্ড সহ দেশের ১৩টা রাজ‍্যে প্রায় ৭০টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে।এদের শীর্ষে রয়েছে সেই অক্ষয় পাত্র।তাদের দায়িত্বে রয়েছে ১৮লক্ষ পড়ুয়ার খাবার।এদের খাবারের মান নিয়ে এবং সর্বদা নিরামিষ খাবার দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।ফলে শিশুদের পুষ্টি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।তাছাড়া কোনো বড় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে সবটা তুলে দিলে তারা একচেটিয়া ব‍্যবসার সুযোগ পুরোপুরি গ্রহন করবে।তাতে আদতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিশুরাই।এই মিড ডে মিল নিয়ে বহুবার দূর্নীতির  বিতর্কে জড়িয়েছে সরকার।এর ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছে অভিভাবক ও শিক্ষক ও কর্মীরা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।