দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

চলতি শিক্ষাবর্ষে সিবিএসসি-র পাঠ্য সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন।


সায়ঙ্ক মন্ডল:-চিন্তন নিউজ ৯ই জুলাই:- মঙ্গলবারই সিবিএসই জানিয়ে দিয়েছিল নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাসে তারা কিছু কাটছাঁট করবে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে ছাত্রছাত্রীদের যে নজিরবিহীন পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল সিবিএসই। বুধবার জানা গেল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির সিলেবাস থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

সিবিএসই জানিয়েছিল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য এক তৃতীয়াংশ সিলেবাস তারা বাদ দেবে। এদিন দেখা গেল গণতান্ত্রিক অধিকার, ভারতে খাদ্য নিরাপত্তা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সংক্রান্ত অধ্যায়, নাগরিকত্ব এবং ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ গিয়েছে। যা দেখে অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে সিবিএসই।

একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে পুরোপুরি বাদ গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, নাগরিকত্ব, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতা। স্থানীয় প্রশাসন সংক্রান্ত অধ্যায় থেকে দুটি অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল, ‘কেন স্থানীয় প্রশাসনের দরকার?’ আর ‘ভারতে স্থানীয় প্রশাসনের অগ্রগতি।’ দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘সমসাময়িক বিশ্বে নিরাপত্তা’, ‘পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ’ ও ‘ভারতের সামাজিক ও নয়া সামাজিক আন্দোলন।’

অর্থনীতি থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ‘পরিকল্পনা উন্নয়ন’, ‘ভারতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের ধারা বদল’-এর পাশাপাশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমারের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বৈদেশিক সম্পর্কও বাদ পড়েছে করোনার তাড়নায়। একই সঙ্গে ছেঁটে ফেলা হয়েছে ‘গণতন্ত্র ও বৈচিত্র্য’, ‘জাত-ধর্ম-লিঙ্গ’ শীর্ষক অধ্যায়টি।

সিবিএসই-এর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সমালোচকদের অনেকের মতে, এটা একেবারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যেগুলি বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারকে মতাদর্শগত ভাবে চ্যালেঞ্জ করে ঠিক সেই সেই অধ্যায়গুলিতেই কাঁচি চালানো হয়েছে। এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ুখ বিশ্বাস বলেন, “গণতন্ত্রের সমস্ত স্তম্ভের উপরেই আঘাত হানছে বিজেপি। ওরা যে আসলে শিক্ষায় গৈরিকীকরণ চায় এটা তারই প্রমাণ।” কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এক অধ্যাপকের কথায়, “যে উদ্দ্যেশে অমর্ত্য সেনকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরানো হয়েছিল, যে উদ্দ্যেশ্যে গজেন্দ্র চৌহানরা ফিল্ম ইনস্টিটিউটের মাথায় সেই একই উদ্দেশেই সিলেবাস থেকে এগুলিকে বাদ দেওয়া হয়েছে।”

যদিও সিবিএসই-র বক্তব্য, এটি কেবল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষেই কার্যকরী হবে। মহামারী পরিস্থিতির জন্যই এই সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্য নেই

অপরদিকে এসএফআই এর ,লাস্ট সেমিস্টারের পাস করানোর  দাবি করলো তারা। বর্তমানে  বন্ধ দেশের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। তাই বিভিন্ন রাজ্য ঘোষণা করে দিয়েছে পাশ  করিয়ে দেওয়া হবে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের। 

কিন্তু তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঘোষণা করছে ফাইনাল ইয়ার  পরীক্ষা দিতে হবে। এই নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

এই নির্দেশ আসার পর ইউজিসির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের  পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়া হবে। কিছুক্ষেত্রেও পেন ও খাতা সহযোগে অফলাইনও বিবেচ্য।যদিও এই রাজ্যে অনেক ছাত্রছাত্রীদের নেই স্মার্ট ফোন বা ইন্টারনেট। প্রশ্ন উঠেছে কি করে হবে পরীক্ষা? 

বাম ছাত্র সংগঠন দাবি করছে, অনেক ছাত্রদের কোনো পরিকাঠামো নেই, ইন্টারনেট ব্যাবস্থা ভালো নয়, নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতা নিয়ে বলেছে এসএফআই। 

বাম ছাত্র সংগঠন দাবি করছে, সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের ফাইনাল ইয়ারে পাস করাতে হবে। তাঁদের স্পষ্ট কথা” আগে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন, পরে পরীক্ষা। জীবন বেঁচে গেলে পরীক্ষা দেওয়া যাবে  প্রচুর। তাঁরা আরও জানিয়েছেন,ছাত্র-ছাত্রীদের  নিরাপত্তার কথা ভেবেই  আমরা এই  ন্যায্য দাবি করছেন। আপাতত তাঁরা একটু ন্যায় পেলেই খুশী। 

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য  ন্যায় আদায় করবার জন্য আন্দোলনে সামিল হবেন বারবার। এমনটাই জানানো হয়েছে তাঁদের তরফ থেকে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।