দেশ

বাবা রামদেবের অ্যালোপ্যাথি মেডিসিনের বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষুব্ধ সরকারি স্বাস্থ্যমন্ত্রক


মধুমিতা রায় : চিন্তন নিউজ:২৮শে মে:– অতিমারী পরিস্থিতিতে বেহাল দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। কোভিড মোকাবিলায় অক্সিজেন থেকে হাসপাতালে বেড পাওয়া, সবেতেই বেগ পেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ভ্যাকসিন অপ্রতুল। এমন অবস্থায় বাবা রামদেবের অ্যালোপ্যাথি মেডিসিনের ব্যবহার নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন । বাবা রামদেব , অ্যালোপ্যাথি ওষুধকে “ বোকা বিজ্ঞান” বলে অভিহিত করেন। এবং তিনি করোনা চিকিৎসার জন্য অনুমোদিত ওষুধ রেমডেসিভির , ফ্যাভিফ্লু কোভিড চিকিৎসায় ব্যর্থ প্রমানিত হয়েছে বলে সমালোচনা করেন। বাবা রামদেবের এই মন্তব্যের জন্য ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এক হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলার নোটিশ পাঠান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে বাবা রামদেবের গ্ৰেফতারির দাবিতে। “ঠগ রামদেব”, “মহাঠগ রামদেব”, “গ্রেফতার রামদেব” বলে হ্যাশট্যাগ চলে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এসব দেখে আবারও মন্তব্য করেছেন বাবা রামদেব । বলেছেন “ ওরা তো দূরের কথা , স্বামী রামদেবকে গ্রেফতার করতে ওদের বাবাও পারবেনা। ” সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এই ভিডিও । কার্যত কেন্দ্রের প্রশাসনকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি । বলেছেন “ চিকিৎসা বা অক্সিজেন না পেয়ে যত মানুষ মারা গিয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ খেয়ে । অ্যালোপ্যাথি এক দেউলিয়া হয়ে যাওয়া বিজ্ঞান।” সম্প্রতি আরো একটি ভিডিওতে তিনি বলেছেন “ টীকা নেওয়া সত্ত্বেও দেশের এক হাজার চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে ।”

একের পর এক ভিডিও বার্তায় কার্যত কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রককেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। রামদেবের এই সব বিতর্কিত মন্তব্যে র জন্য ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই চিঠি লিখেছেন, রামদেবের গ্ৰেফতারির দাবিতে দেশদ্রোহের মামলা দায়েরের আর্জি জানিয়ে । ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ঐ চিঠিতে উল্লেখ করেছেন “ দেশে এখনও পর্যন্ত যত জন টীকা পেয়েছেন , তাদের মধ্যে মাত্র ০.০৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ” অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য কোভিড চিকিৎসায় সরকারি বিধি এবং টীকাকরণ কর্মসূচি নিয়ে ভূল বার্তা দিয়েছেন রামদেব। এবং চিকিৎসক মহল সরকারের জারি করা নিয়মনীতি মেনে যাবতীয় কাজ করছেন । ঐ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে “কোভিডের প্রথম ঢেউ এ ৭৫৩ জন ও দ্বিতীয় ঢেউ এ ৫১৩ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। যারা বিভিন্ন কারণে টীকা নিতে সক্ষম হননি ”।

এই পরিস্থিতিতে রামদেবের মন্তব্য আসলে সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও অ্যালোপ্যাথ বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে । একমাত্র টীকাকরণের মাধ্যমে মানুষ কে করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচানো সম্ভব বলে দাবি করেছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। এবং বাবা রামদেব যে জনমানসে ভুল বার্তা দিচ্ছেন তার জন্য যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এখন দেখার, এই বিষয়ে সরকার কি ব্যবস্থা গ্ৰহণ করে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।