দেশ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

অতিমারী মোকাবেলায় মৃত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনো তথ্য‌ই নেই সরকারের কাছে


সূপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৭ই সেপ্টেম্বর,২০২০:- কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানতম কাজ দেশের মানুষের সুরক্ষা দেওয়া , তাদের ভালোমন্দের খবর রাখা বিশেষ করে যখন মানুষ বিপদের মুখে। অথচ নরেন্দ্র মোদী সরকার এই করোনা কালে কতজন পরিযায়ী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন তার কোন রিপোর্ট নেই সরকারের কাছে। এবার আরও এক অকর্মন্যতা দেশবাসীর সামনে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। মার্চ মাস থেকে ভারতবর্ষ করোনা কবলে । সম্পূর্ণ অচেনা এক রোগ । হু হু করে আক্রান্ত হয়েছেন মানুষ। আর তাঁদের যারা চিকিৎসা করেছেন, সরাসরি সামনে থেকে সেই মানুষের ভগবান ডাক্তারবাবুরা। তাঁরা এবং তাঁদের সাথে আক্রান্ত হয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী থেকে নার্স সকলেই। তাঁদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন। আর অদ্ভুত ভাবে সেই তথ্যটাই নেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন অবশ্য এই নিয়ে কোন কথা বলতে রাজী হননি, আর স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী অশ্বিনীকুমার চৌবে এক সাংবাদিক বৈঠকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়েছেন যে করোনা সংক্রমণ এ কতজন ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন তার কোন লিখিত হিসেব তাদের কাছে নেই। আরও উদাসীনতা দেখিয়ে বলেছেন যে, হাসপাতালের দায় সেই রাজ্যের রাজ্যসরকারের। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বলার কিছু নেই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই সাংবাদিক বৈঠকের পরই নিন্দায় সরব হয়েছেন আইএম এ। তাঁরা অত্যন্ত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছেন ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্যকর্মী – নার্স সকলে। প্রচুর ডাক্তার নার্সদের প্রাণ গেছে কোভিড -১৯ এ।অন্য কোনো দেশে এত ডাক্তার বা নার্সদের প্রাণ যায়নি অকালে। আর তাঁদের‌ই কোন খবর রাখেনা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।।

এর পরেই এক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আইএম এ।। তাঁরা ভারতে কতজন চিকিৎসক , নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীদের মৃত্যু হয়েছে তার একটা হিসেব প্রকাশ করেছে। তাদের হিসেব অনুযায়ী ভারতবর্ষের ৩৮২ জন চিকিৎসক কোভিড– ১৯ এ প্রান হারিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে আইএম এ জানিয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই চিকিৎসকদের পরিবারের সদস্যদের পাশে যেন সরকার দাঁড়ায় ও তাদের দায়িত্ব নেয়।। চিকিৎসক ছাড়াও কতজন নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন তার একটা সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাঁরা যে চিঠি কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠিয়েছে তাতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার যদি অতিমারিতে কতজন চিকিৎসক নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন তার একটা সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে না পারে তাহলে সরকার মহামারী আইন ১৮৯৭ এবং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন পরিচালনার নৈতিক দায়িত্ব হারাবে।

সংগঠন মারাত্মক ক্ষোভ প্রকাশ করেন সরকারের বিরুদ্ধে।। সরকারকে ভন্ড বলে বিষোদগার করেছে সংগঠন। চিকিৎসক বা স্বাস্ব্যকর্মীদের “” করোনা যোদ্ধা”” বলে সন্মোধন করেছে অথচ তাঁরা মারা গেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়ায় নি।

তাঁরা আরও জানিয়েছেন দাঁড়াবে কি করে সরকার তো জানেই না কতজন চিকিৎসক করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে চিকিৎসা করতে গিয়ে মারা গেছেন। মার্চ মাস এ সরকার ঘোষণা করেছিল করোনা চিকিৎসা করতে গিয়ে কোন চিকিৎসক মারা গেলে তিনি ৫০ লক্ষ টাকার বিমার আওতায় আসবেন। অথচ কতো চিকিৎসক মারা গেছেন তার একটা সম্পূর্ণ তালিকা না থাকে তাহলে বিমার টাকা কিভাবে বা কাকে দেবে কেন্দ্র!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।