জেলা রাজ্য

সারাদেশের সাথে আরামবাগেও শ্রদ্ধার সাথে পালিত হলো সি,আই টি ইউ র ৫১তম প্রতিষ্ঠা দিবস।


সুদীপ্ত পোদ্দার:চিন্তন নিউজ:৩০শে মে:- উৎপাদন,বন্টন, বিনিময়ের সামাজীকিকরণের মধ্য দিয়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষে পথ চলছে সি আই টি ইউ।একটা সময়ে দেশের শ্রমিক শ্রেনীর উপরে ক্রমাগত আক্রমন সংগঠিত হচ্ছিল ।পাটশিল্প থেকে শুরু করে কয়লা,ইস্পাত, পরিবহণ শিল্পে শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছিলেন। শ্রমিক তার কাজ ফিরে পেতে গোটা দেশ জুড়ে আন্দোলন শুরু করে।বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলিতে একের পর এক সফল ধর্মঘট সংগঠিত হয়।ঠিক এইরকম একটা সময়ের দাবী ছিল শ্রমিক শ্রেনীকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং সরকারের শ্রমিক বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গোটা দেশ জুড়ে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন সংগঠিত করা।তৎকালীন বামপন্থী প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এ.আই.টি. ইউ.সি সে কাজ সঠিক ভাবে করতে পারছিল না।মূলত ১৯৬৪সাল থেকে এ.আই.টি.ইউ.সি র মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দেয়।মালিকদের বিরুদ্ধে শ্রমিকের লড়াই এর অভিমুখ কি হবে তা নিয়ে মত পার্থক্য জোরালো হয়।এ.আই.টি.ইউ.সি র মধ্যে যারা শ্রেণীঐক্য,শ্রেণী সংগ্রামের পথ কে সমর্থন করতেন তাদের অগণতান্ত্রিক ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়।অনেক ইউনিয়ন এর এ.আই.টি. ইউ.সি র অনুমোদন বাতিল করা হয়।আমাদের রাজ্যে জয়া কারখানা, হিন্দমোটর সহ কযেকটি কারখানার ইউনিয়ন এর এ আই টি ইউ সি র অনুমোদন বাতিল করা হয় ।

সর্বোপরি সংগঠনকে শ্রেণী সংগ্রামের পথ থেকে শ্রেনী সমঝোতার পথে পরিচালনার চেষ্টা করা হয় ।এই রকম একটা প্রেক্ষাপটে মালিকপক্ষ এবং তার সরকারের শ্রমিক বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ২৬শে মে থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত কলকাতার রনজি স্টেডিয়ামে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সি.আই.টি.ইউ প্রতিষ্ঠিত হয় । ৩০শে মে দিনটি সি.আই.টি.ইউ র প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।মালিকপক্ষ এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাদের দাবী এবং অধিকার অর্জনের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করে চলেছে সি.আই.টি.ইউ।জন্মলগ্ন থেকে আজও দেশের শ্রমিক শ্রেনীকে সংগঠিত করার চেষ্টা নিরলস ভাবে করে চলেছে সি আই টি ইউ।

বিশ্বায়ন,উদারীকরণ,বেসরকারিকরনের মধ্য দিয়ে দেশের শ্রমিকশ্রেনীর উপর তীব্র আক্রমণ নামিয়ে এনেছে দেশের সরকার।তার বিরুদ্ধে সি আই টি ইউ গোটা দেশ জুড়ে আন্দোলন সংগঠিত করছে । শ্রম আইন সংশোধনের নামে শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নিয়ে মালিকের আরো বেশি মুনাফার ব্যবস্থা করছে সরকার ।শ্রমিকের অর্জিত অধিকার রক্ষা করার সংগ্রাম করে চলেছে সি আই টি ইউ । শ্রেণী সংগ্রামের তত্ত্বকে হাতিয়ার করে মানুষের দ্বারা মানুষকে শোষনের ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে এক নতুন সমাজ ব্যবস্থার লক্ষ্যে পথ চলছে সেন্টার অব ইণ্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন ।
সিটু আজ সারা দেশে সেই সংগ্রামের ইতিহাস ছড়িয়ে দেবার জন্যে বেছে নিয়েছে প্রতিষ্ঠা দিবসকে ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।