সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ১ মার্চ: দিল্লিতে যখন পরিকল্পনা মাফিক দাঙ্গা চলছে, ইট গুলি বোমা হামলায় নিহত এবং আহত হচ্ছে মানুষ তখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ভোজ খাচ্ছেন। বিজেপি ও সংঘ পরিবারের কুৎসিত পরিকল্পনাতে এই দাঙ্গার সুত্রপাত। আর পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার কথা অনুযায়ী তিনি সববিষয়ে সবার আগে কথা বলেন কিন্তু এই বিষয়ে তিনি মুখে “রা” কাড়েননি। গরিবের অতিপ্রয়োজনীয় পিঁয়াজ এর দাম যখন ১৫০/- হয়েছিল তখন তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে কথা বলেননি। কিন্তু তেমন প্রয়োজনীয় নয় পোস্ত; সেই বিষয়ে কথা বলেছেন অমিত শার সঙ্গে। বিদ্যুৎ এর দাম দিনের দিন বাড়ছে অথচ কোন প্রতিকার না করে নাকে সরষের তেল দিয়ে রাজ্যসরকার ঘুমাচ্ছে। কে প্রতিকার করবে?
শনিবার চাপড়ায় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক কমরেড সূর্যকান্ত মিশ্র এই প্রশ্ন গুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন জান প্রান দিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে, রক্ষা করতে হবে সংবিধানকে। কৃষক সভা আয়োজিত এক বিরাট জনসভায় কমরেড মিশ্র বলেন, এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যা যা করছেন তা সিবিআই এর হাত থেকে রক্ষা পেতে। ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই তৃনমুল সরকার একটিও অভিযোগ আনতে পারেননি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম বার সরকারে আসার আগে নির্বাচনী প্রচারে বলেছেন বিদেশে যত কালো টাকা আছে তা তিনি ফেরত আনবেন ক্ষমতায় আসলে এবং দোষীকে গ্রেফতার করা হবে। অথচ তাঁর আমলে ললিত মোদী, নীরব মোদীরা দেশের জনগণের কোটি কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পালাল আর তাতে সাহায্য করল কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপি ও সংঘ পরিবার যুক্তি করে রাজধানীর বুকে দাঙ্গা বাধালো আর তাতে ৪২ জন গরিব মানুষের প্রাণ গেল। বহু মানুষ আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
তৃনমুল পরিচালিত সরকারের নেত্রী মুখে “রা” কাটছেন না। উল্টে একনম্বর দাঙ্গাবাজ অমিত শার সঙ্গে বসে ভোজ খাচ্ছেন। এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন “কেন?” তার কারণ মমতা ব্যানার্জি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের দালালি করবেন আর পশ্চিম বাংলাতে ফিরে বলবেন আমন্ত্রণ রক্ষার জন্য যেতে হল। তিনি পোস্ত চাষের কথা বলবেন কিন্তু পিঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা হলে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মুখ খুলবেন না। তাঁর কাছে সিএএ, এন আর সি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে কিনা তখন তিনি অবশ্যম্ভাবী ভাবে বলবেন ওসব কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যপার রাজ্য ওসব মানে না। অথচ বিল পাশের দিন তার দলের ৮ জন সংসদ অনুপস্থিত ছিলেন।
নেত্রীর মুখে কুলুপ আর ওদিকে বিল পাশ হয়ে গেল। গত ৯ বছরের মধ্যে অনেক কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য পায়নি; মহাজনের ঋন শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। কাশ্মীরে একমাত্র ওমর আবদুল্লা সরকার পূর্নাঙ্গ ভূমিসংস্কার করেছেন অথচ সেই কাশ্মীরকেই দু’ভাগ করা হলো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে সিএএ, এন আর সি নিয়ে কোন প্রশ্ন করতে গেলে তিনি সটান বলে দেন এসব নিয়ে তিনি কোন উত্তর দেবেন না। কেন উত্তর দেবেন না? জানেন উত্তর দিলে তাঁর সমূহ বিপদের সম্ভাবনা।
কমরেড মিশ্র বলেছেন, আগামী দিনে বিজেপি ও সংঘ পরিবারকে মুখথুবড়ে পড়তেই হবে। তার জন্য জীবন পন করে এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক অদ্ভুত কথা বলেছেন, তিনি নাকি বিদেশিদের ভোটে জয়ী হয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাহলে তো এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। কমরেড মিশ্র যখন এই কথা বলেন তখন জনগণের করতালিতে মাঠ মুখরিত হয়ে উঠে।