রঘুনাথ ভট্টাচার্য্য:চিন্তন নিউজ:২০শে মে:–করোনার ধ্বংসলীলা অব্যাহত। সারা বিশ্ব জয়ের নেশা তার করাল চোখে। ক্রমশঃ সে গ্রাস করছে একের পর দেশ। বড় ছোটোর কোনো বাছ বিচার নেই।
উত্তর আমেরিকার আরও কিছু রাজ্য নতুন করে সংক্রমিত।এবং তা আগের তুলনায় ভয়াবহ। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থাও সঙ্গীন হয়ে উঠছে একে একে। রাশিয়া করোনার আক্রমণে পুরোপুরি পর্যুদস্ত। গত চব্বিশ ঘণ্টায় রাশিয়ায় ৯২৬৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে করোনা ১৯ সংক্রমিত অবস্থায়। সেদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিনলাখ ছাড়ালো। মৃত দু’হাজার আটশ’ সাঁইত্রিশ জন বলে সরকারি ভাবে জানান হয়েছে। অবশ্য এই তথ্য বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সন্দেহের লক্ষ্যে। মস্কো সংক্রমণের শীর্ষে ও তার পরেই সেন্টপিটার্সবাগ। প্রশাসনের নতুন নির্দেশে শুধু করোনায় মৃতদের নয়, সমস্ত মৃতদেহই কফিনে ভরে সমাহিত করা হচ্ছে, সাবধানতার নিদর্শন হিসাবে। রাশিয়া এখন সক্রমণে দ্বিতীয় আমেরিকার পরেই।
লাতিনা আমেরিকার চিত্র বেশ দুশ্চিন্তার সেখানে আক্রান্ত ৪,৮৩,৪০০জন ও জীবন গেছে ৩০,৯০০ জনের,যেখানে আমেরিকায় সংক্রমিত ১৫,০৮,৯৫৭ জন। মৃত ৯০৩৬৯।
ব্রাজিলে অবস্থায় দ্রুত অবনতি বিশেষজ্ঞদের অনুমানকেই সমর্থন করল। গতকাল পর্যন্ত সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২লাখ ৫৫,৩৬৮ জন, আর মৃত ১৬হাজার ৮৫৩। সেখানে সরকার যথেষ্ট পরীক্ষা করাচ্ছে না বলে অভিযোগের কথা শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, সেদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে।
অন্যান্য জনবহুল শহরগুলোর মধ্যে রিও বা সাওপাওলোতে পঁচাশি শতাংশ আইসিসিইউ শয্যা করোনার দখলে। চিলির সান্তিয়াগো শহরের অবস্থাও তথৈবচ। সেখানে বিভিন্ন
হাসপাতালের মোট শয্যার ৯০শতাংশ করোনা রোগীতে ভর্তি। আর্জেন্টিনায় বুয়েন্স আয়ার্সে আক্রমণ ক্রমবর্ধমান লকডাউন তোলার পরেই। প্রতিবেশী কলম্বিয়ার লেটেসিয়া শহরে হাসপাতালে জায়গা না হওয়ায় রোগীর জন্য হোটেল ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে আক্রান্ত ১৬,২৯৫ এবং মৃত ৫৯২জন।
আশঙ্কার কথা হল, সারা পৃথিবীতেই, প্রথমদিকের সংক্রমণের শিকার দেশগুলিতে , আক্রমণের রেখাচিত্র নীচের মুখে ছিল,, সেগুলিতে আবার নতুন করে সংক্রমণ হবার খবর পাওয়া গেছে বলে প্রকাশ। বাংলাদেশ
পিছিয়ে নেই। সেখানেও নতুনভাবে ১,৬০২ জনের সংক্রমণ পাওয়ার পিওয়া যাচ্ছে।
এই মারণ বিপন্নতার মধ্যেই একটু হাসির খোরাক পাওয়া গেল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাকি কোভিড১৯ প্রতিহত করতে খাচ্ছেন ম্যালেরিয়ার ওষুধ,যদিও তাঁর নিজের সরকার
এই ওষুধটি বর্জন করার জন্য জনগণকে সতর্ক করেছে।
এদিকে, করোনায় লকডাউনের ফলশ্রুতিতে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থার হাল বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সারা পৃথিবীতে করোনায় গ্রস্ত হল প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ,মৃত তিনলক্ষেরও বেশ বেশী, সেখানে উন্নত দেশগুলিতেই বেকারির হার বেড়ে চলেছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবুও মানব সভ্যতার পতাকা উঁচুতেই উড্ডীন থাকে। বিজ্ঞান তার আশার প্রদীপ জ্বেলে রাখে মানুষের জয়যাত্রার পথে আলো ধরে রাখার জন্য। বিভিন্ন দেশের গবেষণাগারে চলছে আলোর তপস্যা কিউবা, ইংল্যান্ড, চীন আমেরিকা ইত্যাদি দেশে তাঁরা অনেকটাই এগিয়ে গেছেন। মানবদেহে প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক। আমরা জিতবই।