রঘুনাথ ভট্টাচার্য্য:চিন্তন নিউজ:২৬শে মে:- দীর্ঘদিন যুদ্ধের পর অবশেষে হার মানলো সিকিম। লকডাউনের চতুর্থ পর্বে এসে হারমানা সিকিম এখন যথেষ্টই সন্ত্রস্ত।কারণ, করোনার এই পদক্ষেপ উত্তরপূর্ব ভারতের এই ছোট রাজ্যটিকে কতটা বিব্রত করতে পারে, সেটাই এখন লক্ষ্য করার।
প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তিটির সন্ধান পাওয়া যায় রবিবার। তিনি দক্ষিণ সিকিমের বাসিন্দা। ১৭ ই মে তিনি দিল্লি থেকে সিকিমে ফেরেন। রীতি অনুযায়ী পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তাকে ‘করোনা ভাইরাস পজিটিভ’ বলে ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা। প্রথম তাঁকে রাবাঙলায় কোয়েরেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। পরে এসটিএনএম কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান হয় বলে সিকিম সরকারের মুখপাত্র সাংবাদিক সম্মেলনে জানান।
প্রথম থেকেই সিকিম অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কোভিড-১৯ এর মুকাবিলা করছিল। সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, পর্য্যটকদের উপর নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যদিও সিকিমের অর্থনীতি পর্য্যটন শিল্পের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। কিন্তু এই কঠোরতার ফলেই এই রাজ্যটি করোনা ১৯ কে দূরে রেখে দিতে পেরেছিল এতদিন।এবার ভারতের সেই একমাত্র করোনা -বর্জিত রাজ্য করোনা যুদ্ধে হার মানলো। নিজেকে ‘ গ্রীন ‘ রাজ্য হিসাবে ধরে রাখতে পারলো না। এর থেকে ধারনা করা যায়, করোনা সংক্রমণের হাত কতদূর লম্বা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিকিম প্রশাসন ও জনসাধারণ যদি সঠিক নিষ্ঠার সঙ্গে নিয়মগুলো মেনে চলতে পারে, তবে সিকিমের স্বাভাবিক সবল স্বাস্থ্য অধিবাসীদের করোনা-বিষের থেকে রক্ষা পেতে পারে।
২০১১ সেন্সাস অনুযায়ী সিকিমের লোকসংখ্যা ছিল ৬,১০,৫৭৭ জন এবং ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮৬ জন। কিন্তু লোকসংখ্যা বৃদ্ধির হার যথেষ্ট বেশি – ১২.৩৬ %। সিকিম ভারতের প্রথম অরগ্যানিক রাজ্য হিসাবে খ্যাত ২০০৩ থেকে। ফলে সেখানে পরিবেশ-ভারসাম্য
এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের প্রতি জনগণ যত্নবান ও একনিষ্ঠ। ১৫/১০/১৮ তারিখে সিকিমকে ১০০ শতাংশ ‘ অর্গানিক রাসায়নিক বিহীন কৃষি অভ্যাসের রাজ্য হিসাবে পুরস্কৃত করা হয় ‘বেষ্ট পলিসি’ এর জন্য ‘ অস্কার
পুরস্কারে।’ বিশ্বসংস্থা এফ্ এ ও – এর পক্ষ থেকে। সিকিম এর পর ২০১৮ সালে ‘ফিউচার পলিসি এওয়ার্ড’ পুরস্কারও অর্জন করে, ব্রাজিল, ডেনমার্ক ও ইক্যুয়েডর- এর মত অগ্রসর দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে।
সেই নিয়মনিষ্ঠার ঐতিহ্য অনুসরণ করে সিকিম নিশ্চয়ই এই আগন্তুক শত্রুকেও সংযত করে রাখতে পারবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেছেন।