দেশ

বেরোজগারির সালতামামি


রঘুনাথ ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ:২৭শে জানুয়ারি:– ভারতের পবিত্র সংবিধানে দেশের নাগরিকদের জন্য যে কয়েকটি অপরিহার্য অধিকার নথিবদ্ধ করেছে, ‘ কাজের অধিকার ‘ অন‍্যতম। রাষ্ট্র তথা প্রশাসন সেই লক্ষ‍্যে যথাযথ ব‍্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য।এটা সরকারের অবশ‍্যকর্তব‍্য। অন‍্যথায় সেই ব‍্যর্থ সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা অধিকার করে থাকার যোগ‍্যতা হারায়।

খবরে প্রকাশ, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএম আইই)দেশে বেকারির সমীক্ষার পর যে সাম্প্রতিক তথ‍্য প্রকাশ করেছে, তা এককথায় এক লাগামহীন দুর্দশার ছবির প্রদর্শনী।

ক্ষমতাসীন সরকার এই বিষয়ের সার্বজনীন গুরূত্ব সম্পর্কে যথেষ্টই অবহিত ছিলেন, এবং সেই কারণেই তাঁরা নির্বাচনকালীন প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন ‘বছরে দু’কোটি চাকরি’র। দুশ্চিন্তার বিষয়, সে প্রতিশ্রুতি অচিরেই ‘ বৃথা আশ্বাস ‘ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত।

নূতন চাকরি , যদি সৃষ্টি হয়েও থাকে তা নিতান্তই নগণ্য, কারন বেকারির বৃদ্ধির হার অপ্রতিরোধ্য। জানা গেল,সিএমআইই-র সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে যে, ২০১৬ সালে ২০-২৪ বছরের স্নাতকদের বেকারির হার যেখানে ছিল ৪৭.১%, ২০১৭ সালে তা ৪২%, ২০১৮ সালে বেড়ে হয় ৫৫.১%, আর, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০%, যা এখন প্রায় দূরারোগ‍্য।

এই ভয়াবহ অবস্থায়, সরকার অত‍্যন্ত যত্নশীল দেশের কর্ম-সম্পদের ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব সংক্রান্ত পরিসংখ্যানকে অবহেলা করে, কারচুপি করে,কর্মহীনতার ক্ষোভকে আদৌ কোনও গুরূত্ব না দিয়ে,তাকে অভিমুখহীন করার নানারকম
কৌশল অবলম্বন করতে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই​ বিপুল ছাঁটাই, নতুন নিয়োগ প্রায় বন্ধ, বর্তমান
প্রতিষ্ঠানগুলিকে সঙ্কুচিত ও ক্রমশঃ নিষ্ক্রিয় করে তোলা, এ
জাতীয় আত্মঘাতী পদক্ষেপ দেশকে সর্বনাশের পথে নিয়ে
যেতে বাধ‍্য।

দাবী উঠেছে, সরকারের এখন কর্তব‍্য এখনই এব‍্যাপারে যত্নবান হওয়া, অন‍্যথায় দেশের সক্ষম শিক্ষিত বেকারিকে আয়ত্বে আনা অসম্ভব হয়ে পড়বে। অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে উঠেছে ক্রমশঃ।

দেখা যাচ্ছে , ২০১৮ সালে দেশে বেকারির হার ছিল গত
চল্লিশ বছরে সর্বোচ্চ, ৬.১%।২০১৯ সালে সেই সীমা অতিক্রম করে ৭.৫%( ডিসেম্বর পর্যন্ত)।সিআম আইই- এর মতে, গ্রামের কাজের মান বিচারে নিম্নমানের কাজকে এই সমীক্ষার হিসাব থেকে বাদ রাখলে বেকারির হার আরও বাড়বে।দেশের বেকার যুবসমাজকে কাজ না যোগাতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে যে ভাঙন আসবে তার ভয়াবহতার রূপ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল নয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।