নিউজ ডেস্ক: চিন্তন নিউজ:৩০শে সেপ্টেম্বর:- গত ১৪ সেপ্টেম্বর মা, ভাইয়ের সঙ্গে হাথরসের ক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিল ২০ বছরের দলিত তরুণী মণীষা বাল্মীকি। তাকে পিছন থেকে গলায় ওড়না বেঁধে বাজরার ক্ষেতে টেনে নিয়ে যায় চার যুবক। সেই যুবকেরা সকলেই উচ্চবিত্ত। সেখানে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। মেরে হাড় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জিভ কেটে নেওয়া হয় । পঙ্গু হয়ে আইসিইউ–তে শুয়ে ১৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মারা যায় সে। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে গণধর্ষিতা দলিত তরুণীর মৃত্যুর পরে তাঁর দেহ পরিবারের হাতে না দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উত্তাল দেশ। বুধবার সকালেই এই বিষয়ে টুইট করে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এবার টুইট করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ চাইলেন কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। একগুচ্ছ টুইট করে নিজের দাবি তুলে ধরেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, তিনি তরুণীর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন, যখন তিনি তাঁর মেয়ের মৃত্যুর খবর পান।
আরও একটি টুইটে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, মেয়েটির বাবা বলেছেন, উনি কেবলমাত্র সন্তানের ন্যায় বিচার চান। গত রাতে তাঁকে নিজের মেয়ের দেহ শেষবার বাড়ি নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করার সুযোগটুকুও দেওয়া হয়নি। ধর্ষিতা তরুণী ও তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার বদলে বিজেপির সরকার মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের শেষ অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকার আপনার কোনও অধিকার নেই যোগী আদিত্যনাথের। তরুণীর বাবা, মায়ের করুণ আর্তি “আমরা ন্যায় চাই। আমরা চাই অপরাধীদের ফাঁসি হোক।”
এদিকে তরুণীর মৃত্যুর পর পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবার। মৃতার ভাই অভিযোগ করেছেন, দিদির দেহ সৎকারের আগেই মধ্যরাতে তা ছিনিয়ে নেয় পুলিশ। এবং পরিত্যক্ত একটি জায়গায় তা দাহ করা হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে মৃতার পরিবার বলেছে, তাঁদের থেকে কোনও অনুমতি না নিয়েই পুলিশ এই কাজ করেছে।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর টুইট বার্তায় বলেছেন, মর্মান্তিক অপরাধ – দলিত মেয়ের এই জঘন্য গণধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনাটি বিজেপির ইউপি রাজ্য সরকার ও পুলিশ কর্তৃক শাসনের বর্বরতা ও ভয়াবহ অমানবিকতায় প্রকাশ করে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী বিজেপি সরকারকে গদিচ্যূত করা প্রয়োজন।
সিপিআই(এম)পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম এক টুইট করে বলেন, অপরাধী ইউপি পুলিশ তার পরিবারের সদস্যদের বাধা দেওয়ার পরে হাতরাসের নৃশংসতার বলি মেয়েটির লাশকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একটি দলিত পরিবারের এমনকি অজয় বিশতের রামরাজ্যে মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের অধিকারও নেই। জাস্টিস ফর মণীষা।
তিনি অপর একটি টুইট বার্তায় বলেন- বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ক্ষুব্ধ জ্যোতি বসু বিজেপিকে বর্বর নামে অভিহিত করেছিলেন। এবার হাতরাস কান্ডে যোগি আদিত্যনাথের রাজ্যের ডিএম ও পুলিশের নৃশংসতা দেখে বর্বতার বহর বোঝা যায়।
জাস্টিস ফর মণীষা, এই দাবিতে সারা দেশ এখন উত্তাল। ২০১২ সালের নির্ভয়াকান্ডের বিভৎস্য স্মৃতি উঠে আসছে মানুষের মনে।