রাজ্য

প্রৌঢ়া শবর মহিলাকে ডাইনী অপবাদ দিয়ে তপ্ত রডের ছ্যাঁকা।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:১২ই মার্চ:–ঝাড়গ্রামে ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা। এই অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে সাঁকরাইল থানার বাঘমারি গ্রামে।। পুলিশ প্রশাসনের সামনে এক শবর বৃদ্ধাকে ডাইনি সন্দেহে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা চলল। গ্রামবাসীদের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত সংঘ পরিবারের দিকে। যারা কিনা এই ঘটনায় মদত দিয়েছে।।

এলাকাবাসীর কথার সুত্র ধরে জানা যায় যে এই অঞ্চলে মাঝেমধ্যে গ্রামের মানুষদের মগজ ধোলাই ও ধর্মান্তরকরণ এর জন্য চাপ সৃষ্টি করে।। এই অমানবিক ঘটনার আগে বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের ধর্মান্তরকরণ ও মগজ ধোলাইয়ের আসর।। ঠিক এই সময় ঘটে গেল মধ্যযুগীয় বর্বরতা।। সোমবার রাতে এক অসহায় গরীব বিধবাকে ডাইনি অপবাদে অভিযুক্ত করে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গোটা শরীরে উত্তপ্ত লোহার রড়ের ছ্যাঁকা দিল ধর্মগুরুর সাগরেদরা।।

সুত্রের খবর অনুযায়ী জানা গেছে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য বৃদ্ধাকে পুড়িয়েই মারতো। কিন্তু গ্রামের মানুষ চলে আসায় সেটা সম্ভব হয়নি।। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা গেলে এমন নৃশংসতা লোকসমাজে জানাজানি হয়। গ্রামবাসীরা জানান, এই অঞ্চলে গেরুয়া পোশাক ধারী স্বয়ং সেবক সংঘের লোকজন থাকে।। স্থানীয় লোকজন এর থেকে জানা গেছে যে সোমবার রাত দশটা নাগাদ ভালোকিশোল গ্রামের শবর পাড়া থেকে এক প্রৌঢ়া বৃদ্ধা চম্পা আড়িকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় একটি দল আর সেই দলে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রবীন্দ্র হাঁসদা ।। এই হাঁসদাই নেতৃত্বে ছিলেন চম্পাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কাজে।।

এখানে একটি হাসপাতাল গত দুই বছর ধরে বন্ধ আর এখানেই চলে আর এস এস এর চক্রান্তে চলে পূজা ও ধর্মান্তরকরণ এর অনুষ্ঠান।। সোমবার ধর্মগুরুর সামনে এই ঘটনা ঘটেছে।। খবরে প্রকাশ কিছুদিন আগে ওই রবীন্দ্র হাঁসদার এক আত্মীয় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন আর এর থেকেই ঘটনার সুত্রপাত রটানো হয় গ্রামের মধ্যে ডাইনি আছে।। চারিদিকে এই গুজব ছড়িয়ে বিজেপি ও সংঘ পরিবার পরিকল্পনা করে ধর্মান্তরকরণ ও মগজধোলাই এর আসর বসায়।। কোন কারন ছাড়াই। যখন ওই বৃদ্ধার ছেলে সুশীল আড়ি ও তার বৌ গ্রামে অনুপস্থিত সেই সুযোগে প্রৌঢ়া চম্পা আড়িকে চ্যাঙদোলা করে নিয়ে এসে চরম মারধর করে ।। তৃনমুলের রাজত্বে ওই বন্ধ চিকিৎসা কেন্দ্র বুজরুকির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।।আর এখানেই বাড়বাড়ন্ত ঘটেছে বিজেপি ও সংঘ পরিবার এর।। এখানকার গ্রাম পঞ্চায়েতের সকল নেতাকর্মীরা বিজেপির। সেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটা ঘরের মধ্যে বৃদ্ধার মুখে কাপড় বেঁধে তার সারা শরীরে তাতানো লোহার রড দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হয়।। বৃদ্ধার চাপা কান্নার আওয়াজে গ্রামের মানুষ জড়ো হয়েএই অত্যাচার বন্ধ করা হয়।। এরপর বৃদ্ধাকে ভয় ও হুমকি দিয়ে তার বাড়ির উঠানে ফেলে দিয়ে যায় সংঘ ও বিজেপি র লোকজন।। নৃশংস অত্যাচারে অত্যাচারীত হয়ে বৃদ্ধা আর উঠতে পারেনি পরে প্রতিবেশীরা তাঁর ছেলে মেয়েদের খবর দেয়।।

এত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সেখানে পুলিশ আসে এবং পুলিশের সামনে বৃদ্ধা গোটা ঘটনা তুলে ধরেন।। তখন বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বৃদ্ধার ছেলে সাতজনের নামে পুলিশের কাছে ডায়রি করে। মুল অভিযুক্ত রবীন্দ্র হাঁসদা সহ অনেকেই পুলিশের চোখ এড়িয়ে চম্পট দিয়েছে।। গ্রামের মানুষ বলেছেন এই অঞ্চলে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।। তাদের আর ও দাবি গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অবিলম্বে খোলার ব্যবস্থা করতে হবে।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।