বিনোদন

‘ঋত্বিক ঘটক’–জন্মদিনে শ্রদ্ধায় স্মরণ।


নিউজ ডেস্ক:চিন্তন নিউজ:৪ঠা নভেম্বর :–ঋত্বিক ঘটক ১৯২৫ সালের ৪ঠা নভেম্বর পূর্ববঙ্গ, বর্তমান বাংলাদেশের জিন্দাবাজার, ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম ইন্দুবালা দেবী এবং বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক। তিনি বাবা-মায়ের কনিষ্ঠতম সন্তান। ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষ এবং ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পরে পূর্ববঙ্গের প্রচুর লোক কলকাতায় আশ্রয় নেয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় তার পরিবার কলকাতায় চলে যায়। শরণার্থীদের অস্তিত্বের সংকট তাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে , পরবর্তী জীবনে তার চলচ্চিত্রে এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯৪৮ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এম.এ কোর্স শেষ করেও পরীক্ষা না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন তিনি।

বাংলার চিত্র জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ঋত্বিক ঘটক। নিখাদ কমিউনিস্ট মনভাব নিয়ে তিনি পার্টি করেছেন।তিনি গণনাট্যের সক্রিয় কর্মী থেকেছেন। তাঁর রচিত, পরিচালিত সিনেমা, নাটকে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তাধারার প্রকাশ ঘটেছে।
একসঙ্গে লক্ষ মানুষের কাছে নিজের কথা এখুনি বলতে চলচ্চিত্রই একমাত্র মাধ্যম’ বলে মনে করতেন , বাংলা সিনেমার অন্যতম পরিচালক ঋত্বিক ঘটক।

যুগসচেতন চলচ্চিত্রকার, গল্পকার, নাট্যকার, অভিনেতা সেই মানুষটি সারা জীবন ধরে আসলে ভেবেছেন মানুষের কথা। মানুষের হয়েই কথা বলে তাঁর প্রতিটি সৃষ্টি, তাঁর পরিচালিত সিনেমাগুলি হ’ল —বাড়ি থেকে পালিয়ে, কোমল গান্ধার, মেঘে ঢাকা তারা, অযান্ত্রিক ইত্যাদি। সব সিনেমায় জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তিনি তাঁর শিল্পকলার জন্য অনেক পুরস্কারে ভূষিত হন।১৯৭০: ভারত সরকার তাকে শিল্পকলায় পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৭৪: যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭৪: তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পরিচালক বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।

তার বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং তিনি কবিতা ও নাটক লিখতেন। তার বড় ভাই ঐ সময়ের খ্যাতিমান এবং ব্যতিক্রমী লেখক মনীশ ঘটক ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক এবং সমাজকর্মী। আইপিটিএ থিয়েটার মুভমেন্ট এবং তেভাগা আন্দোলনে মনীশ ঘটক জড়িত ছিলেন। মনীশ ঘটকের মেয়ে বিখ্যাত লেখিকা ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী। ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটক ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা।তাদের দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তান। মানুষের কথা ভেবে মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন তিনি। লিভারের অসুখে ঋত্বিক ঘটক মারা যান।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।