নিউজডেস্ক, চিন্তন নিউজ, ২১ মে: প্রকাশিত হলো মাধ্যমিকের ফল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৮৮ দিনের মাথায় এবারের ফল প্রকাশ হলো বলে পর্ষদ সভাপতি কল্যানময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এবার মোট পাশের হার ৮৬,০৭%, যা বিগত বছরের সমস্ত রেকর্ড কে ছাপিয়ে গিয়েছে। গত বছর এই হার ছিল ৮৫.৪৯%। এ বছরে ছাত্রীদের পাশের হার ৮২.৮৭%। দৃষ্টিশক্তি হীন পরীক্ষার্থীদের পাশের হার ৯৪.৫৯%।
আর অন্য বারের মতো ই এবারও রাজ্যের মধ্যে সবথেকে ভালো ফল করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। এই জেলার পাশের হার ৯২,১৩%। তার পরেই আছে কোলকাতা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। আর সবথেকে বড় কথা এবার রাজ্যে ১০ লক্ষ্য ৫০ হাজার ৩৯৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে পূর্ব মেদিনীপুর এর সৌগত দাস। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪ (৯৯,১৪%)। ৬৯১ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছে শ্রেয়সী পাল এবং দেবস্মিতা সাহা। ৬৮৯ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে ক্যামেলিয়া রায় এবং ব্রতীন মন্ডল।
সৌগত পূর্ব মেদিনীপুর এর ভগবান পুরের ইলাস পুরের বাসিন্দা। সে মহম্মদ পুর দেশপ্রান বিদ্যাপীঠ এর ছাত্র। তার বাবা ভরত কুমার দাস ঐ স্কুলেরই গণিত বিভাগের শিক্ষক। মা গোয়ালা পুকুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মী। বাড়ির ছোট ছেলে সৌগত প্রথম থেকেই পড়াশোনায় দূর্দান্ত রেজাল্ট করতো।
সৌগত জানিয়েছে, তার সব মিলিয়ে চারটি বিষয়ে গৃহ শিক্ষক ছিল। যার মধ্যে বাবা পড়াতেন গণিত বিষয়ে। এছাড়াও ইংরেজি, বাংলা, জীবন বিজ্ঞান ও ভৌত বিজ্ঞানের গৃহ শিক্ষক ছিল। ইতিহাস ও ভূগোল নিজেই পড়াশোনা করতো।দিনে প্রায় আট থেকে নয় ঘণ্টা পড়াশোনা করতো সে।
তার হবি ছবি আঁকা ও গল্প বই পড়া। তবে সব থেকে মজার বিষয় হলো এই এলাকাটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এলাকা। বছরে অধিকাংশ সময় এই এলাকায় গুলি-বোমায় উত্তপ্ত থাকে। তার মধ্যেও পড়াশোনায় এমন ফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি এলাকাবাসীর।
সৌগত কোনদিনই টিভি দেখার বিষয় উৎসাহী না। মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি তে তার আপত্তি। তাই আইপিএল, ক্রিকেট বিশ্বকাপ বা ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা থেকে নিজেকে বহু দূরে সরিয়ে রেখেছিল সৌগত। তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন গিরি জানিয়েছেন, ছেলেটি স্কুলের প্রথম থেকেই অসাধারণ ফল করে। শিক্ষকদেরও অত্যন্ত সম্মান করে সৌগত। তার এই ফলাফলে স্কুল শিক্ষক হিসেবে তাঁরা গর্ববোধ করতেন বলে জানিয়েছেন।