রাজ্য

বুদ্ধপূর্ণিমার রাতে চলে নির্বিচারে পশু পাখি শিকার।অযধ্যা পাহাড়ের শিকার উৎসব।


২১শে মে : দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়:- রীতি মেনে যুগ যুগ ধরে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে চলে আসছে শিকার উৎসব ।মুলতঃ আদিম জনগোষ্ঠী সাঁওতাল সম্পদায়ের মানুষেরাই এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে। আসাম, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের সাঁওতাল যুবকেরা তীরধনুক, টাঙ্গি, তরোয়াল, বর্শা নিয়ে শিকার উৎসবে মেতে ওঠে। অরন্যবাসি এই সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে শিকার হলো বীরত্বের প্রতীক ।বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বছরের এই একটি মাত্র দিনে ময়ূর থেকে বিভিন্ন ধরনের পাখি, হরিন বনশুয়োর, সজারু, খরগোশ, খটাশ ইত্যাদি শিকার করে থাকে। কয়েক দিন আগের থেকেই ভিন রাজ্যের মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে অযোধ্যা পাহাড়ে। চারিপাশে তাম্বু গেড়ে আস্তানা তৈরি করে, চারিদিকে সাজো সাজো রব দেখে মনে হবে যুদ্ধের অস্থায়ী ক্যাম্প। হাড়িয়া আর মহুয়ার গন্ধে মন মাতাল করা বাতাসে, অহিংসার পুজারী, সান্ত সোমাহীত বুদ্ধের জন্মতিথীতে পূর্ন জ্যোৎস্নার নরম আলোতে চারপাশ থেকে বাদ্য বাজনা বাজিয়ে নির্বিচারে সারা রাত ধরে চলে শিকার উৎসব। রাতের নিঃশব্দতা ভেদকরে হাজার হাজার মানুষের উল্লাস ধ্বনিতে চাপা পড়ে দূর থেকে ভেসে আসা পশুদের পরিত্রাহী চিৎকার। নির্বিচারে হত্যার ফলে দিন দিন পশু পাখির সংখ্যা কমেছে, সবার ভাগ্যে শিকারের সৌভাগ্য টুকু এখন আর ঘটে না, যারা পায় তারা একটু একটু করে অন্যদের দান করে বাকীটা নিজের জন্য রেখে দেয়। পোড়া মাংসের সাথে হাড়িয়ার ও মহুয়ার নেশায় জমে উঠে রাত। সারারাত পাহাড় তোলপাড় করে পরদিন ফিরে যায় যে যার ঘরে যেখানে অপেক্ষা করে আছে প্রিয়তমা বধু।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।