সীমা বিশ্বাস: চিন্তন নিউজ:১৮ই জুন:– গত বছর সিএএ(CAA)র বিরুদ্ধে আন্দোলনে সমগ্ৰ দেশ যখন উত্তাল, সেই সময়ে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়,জওহারলাল নেহেরু বিশ্ব বিদ্যালয় এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রীদের সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। সেই সময়ে নুতন দিল্লীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ সংঘটিত হয়েছিল যেখানে সিএএ (citizenship amendment act) বিরোধী আন্দোলনকারী নেতাদের যুক্ত করে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছিল। তার মধ্যে জে এন ইউ এর গবেষক ছাত্রী আসামের কন্যা দেবঙ্গনা কলিতা, হরিয়ানার নাতাশা নারোয়াল এবং জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশ্বিফ ইকবাল তানহাকে দিল্লী পুলিশ বে আইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন সংক্ষেপে ইউএপিএ (UAPA) র অধীনে এক বছর ধরে জেলবন্দী করে রাখে।গত ১৫জুন ২০২১ তারিখে দিল্লী উচ্চ ন্যায়ালয় শর্ত সাপেক্ষে এই তিন জন ছাত্রছাত্রীকে জামিন দেওয়ার রায় ঘোষণা করে। তাদের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদী ‘ র অভিযোগ নস্যাৎ করে।
ন্যায়ালয়ের মতে- “প্রতিবাদ করার অধিকার’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদী’ কার্যকলাপ দুটো সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। ন্যায়ালয়ের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য এই যে, সরকারের এই মানসিকতা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপদজনক। ন্যায়ালয়ের এই ধরনের পর্যবেক্ষণের দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে দিল্লীর রাজপথে সিএএ(CAA) র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা দেবেঙ্গনা বা আশ্বিফ ইকবালের মত ছাত্র-ছাত্রীরা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সরকারের নীতি এবং কার্যের তারা ছিল মুলত প্রতিবাদকারী। এই দেশের গণতন্ত্রই জণসাধারণকে প্রতিবাদ করার অধিকার দিয়েছে। প্রতিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ এক নয়, হতে পারে না। কিছুদিন আগে বিশিষ্ট সাংবাদিক বিনোদ ডুবার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের বক্তব্য ছিল যে প্রশ্ন করা মানেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা না। বিরোধী সমালোচনাকে গুরুত্বহীন করে জণগণের গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের উপর দমন পীড়ণ চালানো এই সরকারের বিরুদ্ধে ন্যায়পালিকার এই ধরনের স্থিতি মাইল ফলক হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।