রঘুনাথ ভট্টাচার্য:চিন্তন নিউজ:১লা জানুয়ারি:–অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং আরো অনেক কৃতবিদ্য বিদ্বানের সম্পর্কে কুৎসিত মন্তব্য করে এর আগেই কুরুচির পরিচয়ে খ্যাত হয়েছেন শ্রী দিলীপ ঘোষ মহাশয়। তিনি আবারও একটি বোমা ফাটালেন।তবে এবারেরটি কিঞ্চিত বিশেষ বটে। কারন, এবারে দলের তথা নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের প্রশংসা অর্জন লক্ষ্যে তাঁর তৎপরতা সমাজ
সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে অনেক দ্রুত। আরো
স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তার ঔদ্ধত্য প্রকাশের ইচ্ছা। আমরা তার
দ্রুত পদোন্নতি কামনা করি।
খবরে প্রকাশ, গত রবিবার ছিল তাঁর দলের শিক্ষক সেলের অনুষ্ঠান, ন্যাশনাল লাইব্রেরির ভাষাভবনে। স্বভাবতই শ্রীঘোষ ছিলেন অতি গুরুত্বপূর্ণ বক্তা, অবশ্যই পদাধিকার বলে। তিনি তাঁর স্বভাবসুলভ জাঢ্যের সঙ্গে অত্যন্ত অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই তাঁর বক্তব্যে বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইরফান হাবিবের প্রসঙ্গ তুলে নিতান্তই অবাঞ্ছিত মন্তব্য করেন নানারূপ কদর্থক উক্তি করে তিনি বলেন,’ ইরফান হাবিবের লেখা কোনো ইতিহাস নেই।ওনার লেখা কেউ পড়ে না।
তিনি দেশের টাকা বরবাদ করছেন।’ একথা অনস্বীকার্য
যে, শ্রীঘোষের এহেন বক্তব্য ঐ শিক্ষক-সমাবেশের মাথার
ওপর দিয়েই চলে যায়। তবুও তাঁর এই বক্তব্যের উজ্জ্বল পরিপ্রেক্ষিতটি কৌতুহলকর।
নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কেরালার মাননীয় রাজ্যপাল
আরিফ মহম্মদকে বিক্ষোভের মুখে পরতে হয়েছে দিনকয়েক আগে। ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের মত একটি মর্য্যাদাসম্পন্ন সমাবেশে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে ইরফান হাবিবের প্রজ্ঞার উৎকট সমালোচনা করে তিনি বলেন,’ একজন ইতিহাসকার হিসাবে হাবিব অন্যায় করেছেন। তিনি বিস্মৃত হয়েছেন যে, তাঁরা আজকে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছেন।এমন অশোভনীয় আচরণ আমরা আশা করি না।’ দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইতিহাসবিদ সম্পর্কে তাঁর এই মন্তব্য বিদ্বদসমাজে যথেষ্ট উত্তাপ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে। ফলত রাজ্যপাল স্বাভাবিক বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁর বক্তৃতা বার বার বাধা পায়। শেষে একরকম বাধ্য হয়েই তাঁকে অবস্থা সামাল দিতে হয় এই বলে যে, বিরুদ্ধে মতের প্রতি অসহন অগণতান্ত্রিক। এই ঘটনার পরই ইরফান হাবিবকে টার্গেট করে হেনস্থাকরার রাস্তা নিয়েছে বিজেপি দলগত কর্মসূচি হিসাবে।
সিপিএম দল হিসাবে এই উদ্ধত পদক্ষেপের নিন্দা বিরোধিতা করে প্রতিবাদী বক্তব্য রেখেছে। দলের পক্ষে
পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘ দেশের মেধা আজ আক্রমণের মুখে।বিজ্ঞানের কথা, সম্প্রীতির কথা বললেই ভিলেন বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। রামমোহন,বিদ্যাসাগর আজ বেঁচে থাকলে তাঁরাও দিলীপ ঘোষেদের শিকার হতেন। কিছু লোক শুধু কচু আর গরুকেই চেনে।’সাধারন জনের পর্য্যবেক্ষন :মেধার অভাব পড়লেই ঔদ্ধত্য ক্রমশঃ সীমা ছাড়িয়ে যায়।তখন সেই অসংযত ঔদ্ধত্য-সম্বলতা পতনের কারন হয়ে পড়ে।