সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:৬ইডিসেম্বর:-পিঁয়াজ, সবজি নাগাল এর বাইরেহাত ধুয়ে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী__আশঙ্কা সত্যি করে সর্বত্রই পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০/- কিলো দরে।। ব্যাবসায়ীরা কয়েক দিন আগেই বলেছিলেন পিঁঁয়াজের দাম ১৫০/- টাকা হবে আর সেটাই সত্যি হলো।। গত চার মাসে পিঁয়াজ্জে্র দাম ৭ গুন বেড়ে গেছে।। কিন্তু এই দাম বৃদ্ধিতে রাজ্যসরকারের কোন হেলদোল নেই।। তাদের বক্তব্য কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি নীতির ফলে এই দাম বৃদ্ধি।।
আলু, বেগুন সহ সমস্ত সব্জি ৭০/৮০ টাকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে।। শীতের সবজি পিঁয়াজ কলির দাম ১৫০/- টাকা প্রতি কেজি।। সে বিষয়ে সরকারের মুখে কুলুপ।। রাজ্যসরকার এর তৈরি করা টাক্সফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে এই দাম বৃদ্ধি নিয়ে একটি কথাও বলেন নি।। পিঁয়াজের দাম আমদানি কম হচ্ছে বলে বেড়েছে কিন্তু সবজির দাম কেন বৃদ্ধি পেয়েছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন “”আমি বুঝতে পারছি না””… দাম বৃদ্ধির খবর আগাম জানতে পারে কেন্দ্রীয় কৃষি দফতর আর সেই অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্যকে সতর্ক করে থাকে।। ২০১৪ সালে পিঁয়াজ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছিল।। সে বছর কৃষি সচিব আশিস বহুগুনা রাজ্যকে সতর্ক করে চিঠিও লিখেছিলেন।। আশঙ্কা করেছিলেন আগষ্ট থেকে নভেম্বর এর মধ্যে এই দাম বৃদ্ধি ঘটবে এবং আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছিলেন।। সেই সময় এমন চিঠি পেয়ে তৎকালীন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র জরুরী ভিত্তিতে বৈঠক ডেকেছিলেন এবং আড়তে মজুদ পিঁয়াজের পরিমাণ জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।। সেবার পিঁয়াজ এর দাম উঠেছিল কমবেশী ২৪/২৫ টাকা।। রাজ্যসরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নাফেডের কাছ থেকে কিনে সেই পিঁয়াজ খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে।।১০ শতাংশ পিঁয়াজ নাফেডর কাছ থেকে কেনার জন্য কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের কাছে চিঠি ও লিখেছিল রাজ্যসরকার।।
কিন্তু এবারের পরিস্থিতিতে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন আর কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকেও কিছু জানায়নি।। প্রচার করা হচ্ছে নাসিক ও কর্নাটকে পিঁয়াজ কম উৎপাদন হয়েছে। অথচ নাসিকে পিঁয়াজের দাম না পাওয়ায় গত জানুয়ারি/ ফেব্রুয়ারীতে কৃষকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।। জাতীয় সড়ক এর উপর পিঁয়াজ ছড়িয়ে পথ অবরোধ ও করেছিলেন।। সে সময় মাঠের থেকে পিঁয়াজ বিক্রি করেছিলেন ৬/৭ টাকা কেজি দরে।। এবছর আগষ্ট মাস থেকে পিঁয়াজ এর দাম বাড়তে থাকে।। নভেম্বর এ ১৩০/- আর ডিসেম্বর এর প্রথমেই দাম দাঁড়ায় ১৫০/- প্রতি কেজি।। ব্যবসায়ীদের কথা অনুযায়ী নববর্ষে দাম কমলেও কমতে পারে।। কারণ এই সময়টা তেই নাসিক ও কর্নাটকের পিঁয়াজ মাঠ থেকে সোজা রাজ্যের বাজারে আসতে শুরু করে।।আর সেটা পশ্চিম বাংলা তেও আসে।। তাই দাম কমার একটা সম্ভাবনা রয়েছে।। কলকাতার পোস্তার আড়তদাররা বলেছেন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার দরুন এই দাম বৃদ্ধি ঘটেছে।। পশ্চিমবঙ্গের চাহিদার তুলনায় কম আমদানি হয়েছে তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।। দেশজুড়ে কোথাও কখনো পিঁয়াজ এর দাম ১৫০/- হয়নি।।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন রাজ্যের কাছে আগাম খবর ছিল দাম বৃদ্ধি র।। তাই ১২০/- টাকা তে দাম পৌঁছাতেই তারা একটা নিজস্ব দাম ঠিক করে নেয়।। সরকার ৫৯ টাকা যে পিঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় এবং সুফল বাংলা নামে গাড়ি তে করে কয়েকটি বাজারে ৫৯/- কিলো দরে মাথা পিছু পিঁয়াজ বিক্রি করেছে।। এই কর্মসূচি চালিয়েছে ৫ দিন।। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে।। রাজ্যে পিঁয়াজ এর চাহিদা ৮ লক্ষ মেট্রিক টন।। রাজ্যের উৎপাদন ৩ লক্ষ মেট্রিক টন।। বাইরে থেকে আসে ৫ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।।