বিদেশ রাজনৈতিক

বামপন্থা দেশে দেশে(১০)


রঘুনাথ ভট্টাচার্য:চিন্তন নিউজ:৬ই ডিসেম্বর:–বামপন্থী প্রতিবাদের মূর্ত প্রতীক কিউবা তার ঐতিহ‍্যরক্ষা করে চলেছে।মার্কিনী সাম্রাজ‍্যবাদ দক্ষিণআমেরিকার রাষ্ট্রগুলির উপর যে ভাবে চেপে বসে নিজের নিহিত স্বার্থ সিদ্ধির ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে, কিউবার সংগ্রাম তারই বিরুদ্ধে। তারা সমবেত কন্ঠে আওয়াজ তুলেছে – ‘ হয় সমাজতন্ত্র, না হয় মৃত্যু। ‘

১৯৬২ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ্ কেনেডি কিউবার বিরুদ্ধে যে অর্থনৈতিক অবরোধ জারী করেন , সেই
ঐতিহ‍্যই অনুসরন করছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ।রাষ্ট্রসঙ্ঘে অবরোধের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিয়ে ব‍্যর্থ আলোচনার একঘেয়ে প্রসঙ্গ চলে ১৯৯২ থেকে। প্রথম প্রস্তাবক দেশ ছিল কিউবা নিজেই। প্রস্তাব পাস হয়েছিল ৫৯-৩ ভোটে। ৭১টি দেশ নীরব ছিল। এই নীরবতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যত ভেঙেছে ,আর যতই মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র এই ইস‍্যুতে রাষ্ট্রসংঘে একা হয়ে পড়েছে কিউবা ক্রমশঃ বিশ্বে বামপন্থী আন্দোলনে গুরূত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চলতি বছরের শেষ অধিবেশনে এই ইস‍্যুতে ভোট হয়। ১৯৩টি দেশের মধ্যে প্রস্তাব সমর্থনে এগিয়ে আসে১৮৭ টি দেশ। ইজরায়েল ও
ইউএসএ ভোট না দিলেও,এখন আমেরিকার অনুগত ব্রাজিল কিন্তু ভোট দিল প্রস্তাবের পক্ষেই । এটাযে শুধু আমেরিকার কাছে একটা ধাক্কা তাই নয়, অদূর ভবিষ‍্যতে ব্রাজিলে বামপন্থার পুনঃ প্রতিষ্ঠার ইতিবাচক সম্ভাবনার একটি ইঙ্গিত।

কিন্তু উদ্ধত আমেরিকার কোনো হেলদোল নেই। সে তার দেশের বড় বড় ওষুধ কোম্পানিগুলোকে বাধ‍্য করছে কিউবায়​ জীবনদায়ী ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রাখতে। কিউবার নাগরিকদের মার্কিনী ভিসা বন্ধ। হাভানা বাদে আর সব জায়গায় উড়ান বন্ধ। বিমানের জন‍্য যন্ত্র-যন্ত্রাঙ্শ চলাচল নিষিদ্ধ। কিউবার অনাগরিক অধিবাসীদেরও হেনস্থা করছে আমেরিকা।কিউবায় ব‍্যবসায়ী অন‍্যদেশের নাগরিকদের উপর জরিমানা চাপানো হয়। এসব কুকীর্তির একটাই উদ্দেশ্য – কিউবায় সমাজতন্ত্র ধ্বংস করা।

আশার কথা, ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র কিউবার জনতা প্রাণপন সাহসে এই দক্ষিণপন্থী অত‍্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। কিউবার বর্তমান রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল দেওয়াজ কানেল বলিষ্ঠ কন্ঠে তার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছেন ,’ আমাদের জন্মভূমিকে আমরা সব আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখব।’


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।