রাজ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

মুখ্যমন্ত্রীর ভড়ং, বিপদে চিকিৎসকরা


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ১৩ জুন: কেন রোগীমৃত্যু ঘটছে সেটা জানতে পারছে না রোগীর পরিজনরা। আর তার উত্তর না পেয়ে তারা চড়াও হচ্ছে ডাক্তারদের উপর। এই অব্যবস্থাটা সাধারন মানুষ এখন তেমন ভাবে বুঝতে পারছে না। কিন্তু ডাক্তাররা ভালভাবেই বুঝতে পারছেন। তাই এন.আর.এস এ বিক্ষোভরত ডাক্তাররা সরাসরি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে মুখের উপর বলে উঠেন “আপনার হাত রক্তে রাঙা।আপনারাই দায়ী ডাক্তার নিগ্রহের জন্য।” বলেন “মুখ্যমন্ত্রী শুধু নীল সাদা রঙের সাজানো বিল্ডিং দেখিয়ে ভোট নিয়ে চলে যাচ্ছেন আর পরিষেবার ব্যবস্থাহীন হাসপাতালে ডাক্তারদের মার খেতে হচ্ছে।”
ভাবতে অবাক লাগে গত এক বছরে ডাক্তার নার্স মিলে প্রায় ১৫০ র বেশী আক্রান্ত। কেন বাড়ছে এমন প্রবনতা সেই প্রশ্নটাই ঘুরছে সবার মনে।স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার দায় চাপছে হাসপাতালের ডাক্তারদের উপর। সরকারই প্রকারান্তরে ডাক্তার ও রোগীর আপনজনদের লড়িয়ে দিচ্ছে। মার খাওয়ার ভয়ে চিকিৎসকরা অন্য পথ নিচ্ছেন। মানবিকতার সঙ্গে চিকিৎসা না করে গুরুতর রোগীদের “রেফার” করে দিচ্ছেন।
এন.আর.এস এর ঘটনায় চিকিৎসক মহল মূলত দায়ী করেছে রাজ্য সরকার তথা মমতা ব্যানার্জীকে। প্রথমত রাজনৈতিক বিষয়, তৃনমুল দলীয় ভাবে হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।হাসপাতালের শান্তি রক্ষার বদলে স্থানীয় নেতারা হামলাতে মদত দিচ্ছে একের পর এক। আর পুলিশ শাসক দলের ভূমিকার জন্য চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে না। পুলিশের সামনেই নিগৃহীত হচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হেলথ সার্ভিস ডক্টরস এর সম্পাদক ডাঃ মানস গুমটার সরাসরি অভিযোগ করেন যে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। চিকিৎসক নিগ্রহ যাতে না হয় তার জন্য কঠোর আইন প্রনয়ন হবে। কিন্তু কোন কিছুই হয়নি।
জুনিয়ার ডাক্তাররা অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রকাশ্যে ডাক্তারদের দোষারোপ করেছেন, যেন ডাক্তাররা এক একটা ভিলেন। সাধারণ মানুষদের ধারনা হয়েছে সরকার সব ব্যাবস্থা করে রেখেছে কিন্তু ডাক্তার দের অবহেলার কারণে তারা পরিষেবা পাচ্ছেন না।
তিনি কেমন ব্যবস্থা করেছেন তা একটি উদাহরনেই বোঝা যাবে। নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হসপিটালে শয্যা বাড়ানোর দরকার। সেটা বলাতেই তার দলের বিধায়ককে সবার সামনে ঝাঁঝিয়ে উঠেন। বলেন তোমাদের শুধু “চাই আর চাই —–চাওয়ার শেষ নেই তোমাদের”। অথচ এই মুখ্যমন্ত্রীই বলে বেড়িয়েছেন যে বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই সেরা। নির্বাচনী প্রচারে একাধিক সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল তৈরী হয়েছে বলেছেন। বাংলাতে নাকি বিনা পয়সাতে চিকিৎসা পাওয়া যায়। বাংলার মানুষ উন্নত চিকিৎসা পেয়ে খুব সুখে আছেন।
বাস্তবে উন্নয়ন দূরের কথা, বাম সরকারের আমলে গ্রামে গ্রামে যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ছিল সেটাকে ধংস করেছেন। প্রাথমিক স্তরে ব্যবস্থা উন্নত হয়েছিল বলেই প্রনব মুখার্জি রাস্তাতে আহত হয়ে নদীয়া জেলার একটি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকদের সেবাতে সুস্থ হয়ে উঠেন।
ডাঃ গুমটা আরও বলেন রোগীর চাপে চিকিৎসকরা চিকিৎসাই করতে পারছে না। কতগুলো নীলসাদা বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু সেখানে নেই কোনো যন্ত্রপাতি, নেই যথেষ্ট সংখ্যায় নার্স, ডাক্তার। আজ তার মিথ্যাচারনের জন্য মানুষের অশেষ দূর্ভোগ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।