দেশ

আদালত চত্বরে খুন আগ্রা বার কাউন্সিল সভাপতি।



মল্লিকা গাঙ্গুলী, চিন্তন নিউজ, ১২ জুন: সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই সারা দেশ জুড়ে যে এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা প্রতিদিনের ঘটনায় প্রমাণিত। কয়েকটি রাজ্যে বিশেষ করে উত্তর প্রদেশে নির্বাচনের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে নানাভাবে বিরোধী শিবিরের নেতা নেত্রীরা দুষ্কৃতী আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এমনই এক রাজনৈতিক হামলার প্রত্যক্ষ প্রভাব এবার খোদ আদালত চত্বরে! জানা যায়, কয়েকদিন আগে উত্তর প্রদেশের আগ্রা বার কাউন্সিল নির্বাচন হয় এবং এই কাউন্সিলে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন বিশিষ্ট আইনজীবী দরবেশ যাদব নামে এক মহিলা। লড়াকু এই মহিলা সরকার বিরোধী আইনজীবী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, তিনি ইতিমধ্যে বেশ কিছু সরকার বনাম সাধারণ নাগরিক সংক্রান্ত মামলায় কঠোর অবস্থান নিয়ে সরকারের সমালোচনা ক’রে জয়ী ও হয়েছেন। “বিরোধী কন্ঠস্বর” বলে খ্যাত দরবেশ যাদব স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের সুনজরে ছিলেন না। আইনজীবী দরবেশ যাদব আজ দুপুরে এই রকমই একটি মামলায় আগ্রা জেলা আদালত কক্ষে সওয়াল করছিলেন, এমন সময় অকস্মাৎ এক ব্যক্তি দরবেশ যাদব কে লক্ষ্য করে গুলি করে। জানা যায় ঐ দুঃসাহসী আততায়ীর নাম মনীশ শর্মা। নিজের রিভলবার থেকে গুলি করে তিনি নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। দুজনকেই আগ্রার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেও বার কাউন্সিল সভাপতি দরবেশ যাদবকে বাঁচাতে পারেন নি, যদিও হত্যাকারী মনীশ শর্মা এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। প্রকাশ্য দিবালোকে প্রহরী বেষ্টিত ভরা আদালত কক্ষে এহেন ঘটনা সারা উত্তর প্রদেশ জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আগ্রা শহরের মানুষ স্তম্ভিত! আইনরক্ষকদের যদি নিরাপত্তা না থাকে তবে সাধারণ মানুষ কোথায় দাঁড়াবে এই প্রশ্ন এখন আগ্রা শহরের অলিতে গলিতে শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহল বিশেষ করে বিরোধীদের দাবি উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। স্বাভাবিক ভাবেই বার কাউন্সিল সভাপতির উপর দুর্বৃত্ত হামলা এবং হত্যা আইনজীবীদের একাংশকে সরকার বিরোধী করে তুলেছে। উত্তর প্রদেশের রাজনৈতিক মহলও এর পিছনে রাজনীতির হাত আছে বলেই মনে করছে। মনে করা হচ্ছে হামলাকারী মনীশ শর্মা বেঁচে গেলে হয়তো সত্য উদ্ঘাটন হলেও হতে পারে। নির্বাচন পরবর্তী হিংসা ও হানাহানিতে সাধারণ মানুষ দিশাহীন। পশ্চিমবঙ্গে ডাক্তারদের উপর লুম্পেন বাহিনীর আক্রমণের ঘটনার পরই উত্তরপ্রদেশে আইনজীবী হত্যার ঘটনা দেশের গণতন্ত্র প্রিয় মানুষকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। দেশের সাধারণ নাগরিক ভারতবর্ষের এই অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক সমাজ থেকে মুক্তি চায়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।