নিউজ ডেস্ক:চিন্তন নিউজ:১৮ই নভেম্বর:–দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) এর ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার সকালে সংসদভবনের উদ্দ্যেশে রওনা আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বেরোতেই, বের সরাই রোডের কাছে মিছিল আটকে দেয় দিল্লি পুলিশ। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মারধরেরও অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েক জনকে আটকও করা হয়। তার জেরে উত্তেজনা চরমে উঠেছে।জেএনইউ এর ছাত্র ইউনিয়নের সভানেত্রী ঐশী ঘোষকে পুলিশ তীব্র আঘাত করে এবং গ্রেফতার করে।
সোমবার আন্দোলন শুরু হ’তেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর এবং আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। প্রায় ১২০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। অন্য দিকে, আজ থেকেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। নিরাপত্তার নামে সেখানেও বাড়ানো হয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত তিন সপ্তাহ ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন জেএনইউয়ের পড়ুয়ারা। তার জেরে গত সপ্তাহেই খানিকটা পিছু হটেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফি বৃদ্ধি ৩০ গুণ থেকে কমিয়ে ১০ গুণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশ্য তা শুধু মৌখিক।
কিন্তু পড়ুয়াদের দাবি ফি কমানো নয়, তাঁদের দাবি, ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আগের হারেই ফি নিতে হবে, যাতে সকলের পক্ষেই তা বহন করা সম্ভব হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাতে আমল দেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখতে এ দিনই তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রক।
তবে তাতেও ক্ষোভ মেটেনি পড়ুয়াদের। তাঁদের অভিযোগ, পুরোটাই লোক দেখানো। নিম্নবিত্তদের উচ্চমানের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতেই পরিকল্পিত ভাবে ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই যত ক্ষণ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পুরোপুরি প্রত্যাহার না করা হয়, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সেই মতো এ দিন সকালে সংসদভবনের উদ্দেশে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা। সেই কারণেই এত পুলিশ মোতায়েন এবং এত দমনপীড়ন। তাহলে ছাত্র আন্দোলন কি ঠিক আশঙ্কা করেছে। তিন কমিটির সদস্য শুধুই একটি আইওয়াশ!! ছাত্রছাত্রীদের ওপর এই পুলিশি নির্যাতনে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়েছে। কলকাতার দু’টি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদে পথে নেমেছে।
তাঁদের আটকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পুলিশ মোতায়েনে তীব্র বিরোধিতা করেছে অধ্যাপকদের সংগঠন (জেএনইউটিএ)। একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘ছাত্রছাত্রীরা যাতে সংসদভবন পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে তার জন্যই এত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ব্যারিকেড বসানো হয়েছে যেখানে সেখানে। শান্তিপূর্ণ মিছিল করে নিজেদের বার্তা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরে পৌঁছে দেওয়া পড়ুয়াদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। গায়ের জোরে তা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
