রাজ্য

লুট হয়ে যাচ্ছে পঞ্চায়েত কর্মীদের পি এফ এর টাকা, নির্বিকার সরকার।।


চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:২৫শে অক্টোবর:–সরকারি হেফাজতে থেকেও লুট হয়ে যাচ্ছে পঞ্চায়েত কর্মীদের পিএফ এর জমানো টাকা। বারে বারে সরকারের কাছে দরবার করা সত্ত্বেও সরকারের কোনো হেলদোল নেই। রাজ‍্যে এই সরকার আসার পর থেকেই বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বারে বারে। কিন্তু সরকারের নির্বিকার আচরণ এবং শক্ত হাতে এইসব অনিয়মের মোকাবিলার অনীহায় কোনো সমস্যারই সমাধান হয়নি।পাহাড় প্রমাণ অনিয়মের অভিযোগ জমেছে এই সরকারের বিরুদ্ধে।


সম্প্রতি নজিরবিহীন এই দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে রাজ‍্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের সঙ্গে। নকল নামে লুট হয়ে যাচ্ছে কর্মীদের জমানো লক্ষ লক্ষ টাকা। সরকারি ট্রেজারি থেকে টাকা লুটের ঘটনা অত‍্যন্ত দূর্ভাগ্য জনক। এই ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা,স্বরূপনগর,ও সন্দেশখালির দু নম্বর ব্লক এলাকার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কর্মীদের সঙ্গে। এই সব কর্মীরা প্রতিমাসে বেতন থেকে পিএফ খাতে যে যার সাধ‍্যমতো টাকা জমা রাখার পর বছর শেষে সরকারি সুদ যোগ করে হিসাব হাতে পান। তাতে কর্মীরা বুঝতে পারেন বছরে তাদের জমানো টাকা সরকারি সুদ সমেত মোট কতো দাঁড়ালো। কিন্তু এবছর গোটা রাজ‍্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কর্মীরা সেই হিসাব হাতে না পাওয়ায় তারা খোঁজ খবর শুরু করেন। ধরা পড়ে বিরাট এক দূর্নীতির জাল। লোপাট হয়ে গেছে গ্রামপঞ্চায়েত কর্মীদের তিল তিল করে জমানো টাকা ,যা তাদের অবসরের একমাত্র অবলম্বন।


দুঃখের বিষয় সরকার নয় ,এই দূর্নীতির পর্দা ফাঁস করেছে কর্মীরাই। জানা যায় বারাসত ট্রেজারি থেকে দুই মহিলার নামাঙ্কিত একাউন্টে ঢুকেছে প্রচুর পরিমাণ টাকা , যারা পঞ্চায়েতের কর্মীই নন। কিভাবে ঐ টাকা তাদের এ্যাকাউন্টে গেল?এক্ষেত্রে নকল আইডির সাহায্য নিয়ে এই তছরূপ করা হয়েছে। সাধারণ ভাবে সরকারি কর্মীদের পিএফ এর টাকা জিপিএফ নামে পরিচিত। কিন্তু সরকারের আর্থিক অনুদান নিয়ে চলা সংস্থা গুলির কর্মীরা সেটাই পিএফ হিসেবে পান। এই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত কর্মীরা আটের দশকে বামফ্রন্টের আমলে এই পিএফ এর আওতায় আসেন।দূর্নীতির হদিশ পাওয়া গেলেও তা কতদূর বিস্তৃত তা এখনো জানা যায়নি।


গ্রামপঞ্চায়েত কর্মীদের পিএফ খাতে যাবতীয় তহবিলের দেখভাল করে ব্লক প্রশাসন।তার উপর থাকেন বিডিও বা জয়েন্ট বিডিওরা। অনলাইনে কাজ হবার দরুন ডিজিটাল সাক্ষর ব‍্যাবহার করেই তোলা হয়েছে টাকা।এর দায় বিডিওরা অস্বীকার করতে পারে না।তাছাড়া যারা কোনোদিন সরকারি চাকরি করেইনি তাদের এ্যাকাউন্টে কিভাবে গেল এই টাকা!এসব জানা সত্বেও সরকারি তরফে কোনো এফআইআর করা হয়নি।


সরকারি কর্মীরা তাদের শেষ জীবনের সঞ্চয় হারিয়ে দিশেহারা।অনেক ক্ষেত্রে অবসরের তিন বছর হয়ে গেলেও জোটেনি পিএফ এর টাকা।যেহেতু ব্লক প্রশাসন এই টাকার দায়িত্বে রয়েছেন এবং অনিয়ম তাদের হাত দিয়েই হয়েছে তাই অবিলম্বে পঞ্চায়েতর্মীদের হাতে পিএফ তহবিলের দায়িত্ব দেওয়া দরকার এবং জরুরী এই দূর্নীতির তদন্তের ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।