চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ: ১০ই জুলাই:- অতিমারীর আবহে বিদেশে বা ভিনরাজ্যে কর্মরত যেসব কেরলবাসীরা রাজ্যে ফিরেছেন তাদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে সেরাজ্যের সরকার এনেছে এক অভিনব উন্নয়ন মূলক প্রোজেক্ট। ‘ড্রিম কেরালা’ নামক এই প্রোজেক্টের কথা ঘোষণা করে ১লা জুলাই তিরুবনন্তপুরমে মুখ্যমন্ত্রী পি বিজয়ন জানান, মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত মতো নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই প্রোজেক্ট চালু হতে চলেছে, যা বিদেশ ফেরত কেরলবাসীদের পুনর্বাসনে সাহায্য করবে এবং রাজ্যের উন্নয়ন ঘটাবে।
বিপুল সংখ্যক কর্মহীন যেসব কেরলবাসী বিদেশে বা অন্যরাজ্যে কর্মরত ছিলেন এবং বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও উৎকর্ষ অর্জন করেছেন, তাদের সফলভাবে কাজে লাগানোই এই প্রোজেক্টের লক্ষ্য। সরকারি হিসেব অনুযায়ী মোট ১,৪৩,১৪৭ বিদেশে কর্মরত কর্মীর মধ্যে ৫২% কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরেছেন। তার মধ্যে ৪৬,২৫৭জনের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
গত ৭ই মে থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত যেসব বিমান ও জাহাজ রাজ্যে ফিরেছে তার মধ্যে সর্বাধিক কাজ হারানো মানুষ এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে (৭৩,২১২ জন)। আরও বহু উড়ান ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছে। ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানাচ্ছেন, কারোর ঘরে ফেরা আটকানো যায়না। মহামারীর সংকটে কাজ হারানোদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী মানুষ শিল্পক্ষেত্রে ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। কেরল সরকার তাদের জন্যে দায়বদ্ধ, তাদের জন্যেই এই ড্রিম প্রোজেক্ট। রাজ্যের অভিজ্ঞ মানুষের পরামর্শ ও মতামত এই প্রোজেক্টের জন্যে গ্রহণীয়, যা রাজ্যের উন্নয়নে ও প্রোজেক্ট বাস্তবায়নে করতে কাজে লাগবে।
সিভিল সার্ভিস অফিসারদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি এই পরিকল্পনা গুলো বিচার বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পেশ করার আগে এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিধানসভার স্পিকার, বিরোধী নেতা, চারজন মন্ত্রী ও বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে এই প্রোজেক্টের স্টিয়ারিং কমিটি তৈরি হবে। এছাড়াও থাকবেন ৮জন বিশেষজ্ঞ ও ডঃ এম আব্রাহাম কে নিয়ে একটি কমিটি যারা নির্দিষ্ট ১০০ দিনের মধ্যে এই প্রোজেক্টের বাস্তবায়নের বিষয়টি দেখভাল করবে।আগামী ১৫ই নভেম্বর ২০২০ মধ্যে এই প্রোজেক্টের কাজ শেষ হবে।
তিনি বলেন কেরালার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশে কর্মরতরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যার ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে কেরলবাসীর মাথাপিছু আয়।২০১৯ সালে এদের বার্ষিক মোট আয় ছিল ৮৫,০০০ কোটি যা এবছর ১লক্ষ কোটি ছাড়িয়েছে। এদের সঞ্চিত পুঁজিকে কাজে লাগিয়েই বাস্তব রূপ পাবে ড্রিম কেরালা প্রোজেক্ট। এই প্রজেক্ট একদিকে যেমন রাজ্যের উন্নয়ন ঘটাবে, অন্যদিকে বিদেশ ফেরত কর্মহীনদের সুনিশ্চিত আয়ের ব্যবস্থা করবে।