কলমের খোঁচা

ডঃ এ,পি,জে আব্দুল কালামের জন্মদিবস ও শিক্ষার্থী দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।


মিতা দত্ত: চিন্তন নিউজ:১৫ই অক্টোবর:- সমগ্র জীবকূল পৃথিবীতে আগমনের পর থেকে শিক্ষার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করে।সেই শিক্ষা হলো নিতান্তই অস্তিত্বের নিশ্চিতির জন্য শিক্ষা। অন্য জীবকূলের সঙ্গে মানুষের ভিন্নতা হলো মানুষ তাঁর মস্তিষ্ক দিয়ে সে শুধু শেখেই না, এই জগতের পরিবর্তন করতে পারে। তাই মানুুষের সবচেয়ে বড়ো পরিচয় হলো, সে শিক্ষার্থী। এই চরম সত্যটি এ,পি,জে আব্দুল কালাম উপলব্ধি করেছিলেন বলেই হয়তো নিজেকে শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত হ’তে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করতেন। ।

ভারতবর্ষের এই একাদশতম রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী এ,পি,জে আব্দুল কালামের এই শিক্ষার্থী সুলভ ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ২০১০ সালে জাতিসংঘ ওনার জন্মদিনকে “আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী দিবস হিসেবে ” ঘোষণা করেন যা ভারতবাসীর কাছে অহংকার। প্রতি পদে বাধা কাটিয়ে জীবনের গতিধারা অব্যাহত রেখে নজির স্থাপন করেছেন যা ছাত্রসমাজের কাছে শিক্ষণীয়। তাঁর বাণী ছাত্রসমাজকে উদ্দীপ্ত করে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী দিবসে একটু দেখে নেওয়া যাক আমাদের ভারতবর্ষের ও পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যার্থীরা কেমন আছে। তাদের পঠনপাঠনের প্রক্রিয়া কেমন চলছে ।সেই ব্রিটিশ শাসনের হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে টোল, মক্তবের বাইরে আধুনিক শিক্ষা কাঠামোর যাত্রা শুরু। ব্রিটিশ সরকার নিতান্তই নিজের শাসনব্যবস্থার প্রয়োজনে শিক্ষার প্রসারে জোর দিয়েছিল। ফলে শিক্ষার সার্বজনীনতা লঙ্ঘিত হয়।

স্বাধীনতার পর সবশিশু বিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গনে আনার পরিকল্পনার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন নিযুক্ত হলেও, তা বাস্তবায়ন পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল শিক্ষার পেছনে সরকারী ব্যয়ের অপ্রতুলতা ।বর্তমান অবস্থা আরো গুরুতর আকার ধারণ করে। ।নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার শিক্ষার দায়ভার এড়িয়ে চলতে চাইছে। শিক্ষার ব্যবসায়ীকররণের পথ প্রশস্ত করছে। কোনো রাষ্ট্র যদি শিক্ষার দায়ভার না নেয়, তবে একদিকে যেমন সেই দেশ এগোতে পারে না, আবার শিক্ষার্থীদের মননের গঠন বাধাপ্রাপ্ত হয়। আবার পুঁজি যেখানে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানে এটাই হয়তো স্বাভাবিক।

তাই স্বাধীনতার এতোগুলো বছর পরে সব শিশু তাদের এই ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।সংবিধানের শিক্ষার অধিকার আছে কিন্তু তা বাস্তবে হচ্ছে না। পুঁজির আক্রমণ যত বাড়ছে অবস্থা উত্তরোত্তর খারাপ হচ্ছে ।

তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের স্বার্থেও এই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে যেখানে সব শিশু রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ে শিক্ষার অধিকার পায়। কাউকে শিশু শ্রমিক হিসেবে পরিচিত হতে না হয়। তবেই আজকের দিনের স্বার্থকতা ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।