মৌমিতা হীরা, (নিজস্ব প্রতিবেদন): চিন্তন নিউজ: ১৬ই জুন:-যে মানুষেরা রাজনীতি নিয়ে বেশি মাথা ঘামান না, বরং সিনেমা স্পোর্টস ট্র্যাভেল লাইফ স্টাইল নিয়ে বেশি চিন্তিত, তারা খবরে যখন দেখেন, কোন রাজ্যে কোন দল তাদের নিজের দলের বিধায়কদের কোন ফাইভ স্টার হোটেলে কি লাক্সারি রিসর্টে নিয়ে, ছেলেধরার ভয়ে ভীত পিতা-মাতার মত আগলে আগলে রেখেছেন, তখন খানিকক্ষণ হাসাহাসি করেন, তারপর ভুলে যান। খবরের কাগজে মজার হেডলাইন ছাপা হয়, ভেতরের খবরও মজা করে পরিবেশন করা হয়। পড়তে ভালোই লাগে। রাগ হয় না। যেখানে ক্রোধে জ্বলে ওঠার কথা ছিল, সেখানে মুখটা হাসি হাসি হয়ে যায়।
অথচ একটু সচেতন মানুষ হলেই আপনি দেখবেন আপনার ভীষণ রাগ হচ্ছে। অনৈতিক, নির্লজ্জ, লোভী, সমস্ত বিশেষণ একাধারে ব্যবহার করেও রাগ কমছে না। রাগ হবে নাই বা কেন ? এতো চরম অন্যায় । লোকঠকানো যাকে বলে! সাধারণত কোন জিনিস কেনার পরে, সেই জিনিস নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খারাপ হয়ে গেলে আপনি প্রথমে কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করবেন, কোম্পানি আপনার কথা না শুনলে আপনি কনজ্যুমার ফোরামে কমপ্লেন করবেন। কিন্তু আপনি ভোট দেওয়ার পরে , ঠিকঠাক সরকার গঠনের পরে, যদি দেখেন কিছুদিনের মধ্যেই ডিফেকটিভ প্রোডাক্ট এর মত সরকার পড়ে গেলো, তখন কোথায় অভিযোগ করবেন? কারণ বিধায়কদের সংখ্যার বুনটে রাজ্য সরকার দাড়িয়ে থাকে। কিছু বিধায়ক টাকার বদলে অন্য দলে চলে যাওয়ায়, সেই বুনটে ফাঁক দেখা দিলে, সরকার ঢিলে হয়ে খসে পড়ে। এবার কোন কনজ্যুমার ফোরামে আপনি কমপ্লেন করবেন?
এই ঘটনা এখন ঘটছে রাজস্থানে, আগে অন্য রাজ্যে ঘটেছে, ভবিষ্যতে অন্য জায়গায় হবে। এরা সুস্থ রাজনীতির ভাইরাস। এদের জন্যই রাজনীতির ময়দানে যত রকমের রোগ। এরা অর্থের বদলেই দলবদল করে, নীতির জন্য নয়। আরো দেখুন, এই বিলাসিতা, এই অর্থের হাতবদল সবই আপনার টাকায়! রাজকোষের অর্থ যেমন আপনার, বিরাট বিজনেস অর্গানাইজেশনের বিরাট মুনাফার অর্থও তো কোন না কোন ভাবে আপনারই পরিশ্রমের ফসল। কাজেই কেনাবেচার টাকা কোন ফান্ড থেকে এলো তাতে কি এসে যায়? এ শুধুমাত্র আপনার টাকার অপব্যবহার! এই অপব্যবহার আপনি বন্ধ করতে পারেন – অনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের ভোট না দিয়ে, অনৈতিক তথাকথিত জনপ্রতিনিধিরা যে দলের সাথে নিজেদের যুক্ত করবে সেই দলকে ভোট না দিয়ে। অনৈতিকতার ভাইরাস রাজনীতির ময়দান থেকে চিরতরে দূর করা একজন সৎ মানুষের, আমার , আপনার সকলের নৈতিক কর্তব্য।